
স্ট্রোক বা ব্রেন অ্যাটাক হঠাৎ করে শরীরে ঘটে যাওয়া এক প্রাণঘাতী বিপর্যয়। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ মানুষ চিরতরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা রক্তের গ্রুপের সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুঁকির সরাসরি সম্পর্ক আবিষ্কার করেছেন—যা নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে বিশেষজ্ঞদের।
আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যাঁদের রক্তের গ্রুপ ‘A’, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অন্যদিকে, ‘O’ গ্রুপের মানুষ সবচেয়ে নিরাপদ, অর্থাৎ তাঁদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে কম।
কোন গ্রুপে কেমন ঝুঁকি:
* ‘A’ গ্রুপ: কম বয়সেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি
* ‘AB’ গ্রুপ: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, স্মৃতিভ্রংশ বা নিউরো ডিজঅর্ডার এবং টিউবারকুলোসিসের আশঙ্কা বেশি
* ‘B’ গ্রুপ: মাঝারি ঝুঁকি
* ‘O’ গ্রুপ: সবচেয়ে নিরাপদ
স্ট্রোক হয় কেন:উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপসহ বিভিন্ন কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন ধমনিতে রক্ত জমাট বাঁধে বা রক্তনালিতে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, যা ব্রেন স্ট্রোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
স্ট্রোক প্রধানত দুই ধরনের হয়—
1. ইস্কেমিক স্ট্রোক: রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি হয়, ফলে মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছায় না
2. হেমারেজিক স্ট্রোক: রক্তনালিতে ফাটল ধরে, ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়
যাঁদের ‘A’ রক্তের গ্রুপ, তাঁদের রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং সতর্ক জীবনযাপন করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ আগেভাগে সতর্কতা আপনাকে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
রক্তের গ্রুপ নিয়তি নয়, তবে স্বাস্থ্য সচেতনতা আপনাকে ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে। নিজের গ্রুপ জানুন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন, এবং সচেতন থাকুন—কারণ প্রতিটি সচেতন পদক্ষেপই হতে পারে জীবন বাঁচানোর চাবিকাঠি।