খেলা: স্বাধীনতার পর থেকে অ্যাডহক ভিত্তিতেই চলতো বাংলাদেশ ক্রীড়া ফেডারেশন। তবে ১৯৯৬ সাল থেকে এই নিয়মে পরিবর্তন এসেছে। সে সময়ে ক্ষমতায় এসে এই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে আওয়ামী লীগ সরকার। ক্রীড়াঙ্গনের ফেডারেশনগুলোতে নির্বাচনের উদ্যোগ নেয় ক্ষমতাসীনরা। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে নির্বাচন হয়ে আসছে। শুরুর দিকে অন্য সব ফেডারেশনের মতো ফুটবল, ক্রিকেটে ক্ষমতাসীন দল থেকে সভাপতি মনোনীত করা হতো। বাকি সব পদে নির্বাচন হতো। এরপর বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা-ফিফার বাধ্যবাধকতার কারণে ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনেও (বাফুফে) নির্বাচন হয়ে আসছে।
অন্যদিকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ক্রিকেটেও সরকার মনোনীত সভাপতি ছিল। ২০১২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি মনোনীত হয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। পরের বছর নির্বাচিত সভাপতি হন তিনি। ২০১৩ সালের পর ২০১৭ এবং ২০২১ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে এই দায়িত্বে আছেন তিনি। সরাসরি ভোটে ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়, যেখানে সব কাউন্সিলর ওই পদের বিপরীতে ভোট প্রদান করেন। তবে ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নির্বাচনের পদ্ধতি ভিন্ন। এই পদে নির্বাচন করতে অন্য বোর্ড পরিচালকদের মতো আগে পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসতে হয়। এরপর একজন পরিচালকের প্রস্তাবনা এবং অন্য আরেকজন পরিচালকের সমর্থনের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয় সভাপতি। ২০১৩, ১৭ এবং ২১ তিন মেয়াদেই এই প্রক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন পাপন। একাধিক কোনো নাম না আসায় এই পদে কোনো ভোটগ্রহণ হয়নি।
বর্তমানে বিসিবির মোট পরিচালক কোটা ২৫। ক্লাব, জেলা-বিভাগ, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং সাবেক খেলোয়াড়, সার্ভিসেস, বিশ্ববিদ্যালয় কোটা থেকে নির্বাচিত পরিচালক তারা। প্রিমিয়ার, প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগ ক্লাব থেকে কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন তারা। তাদের মধ্য থেকে ১২ জন পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন। মূলত ক্লাব সংশ্লিষ্ট সংগঠক/পৃষ্ঠপোষক/সাবেক ক্রীড়াবিদরা এই ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর এবং পরবর্তীতে পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিন ক্যাটাগরিতে হয় বিসিবি নির্বাচন। জেলা-বিভাগ ক্যাটাগরি : বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনীত কাউন্সিলর ক্লাব ক্যাটাগরি : ঢাকার প্রিমিয়ার, প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ মনোনীত ‘সি’ ক্যাটাগরি : জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও সব সার্ভিসেস, সব বিশ্ববিদ্যালয়, সব শিক্ষাবোর্ড, বিকেএসপি ও কোয়াব মনোনীত
দেশের সাতটি বিভাগে আলাদা পরিচালক নির্বাচন ব্যবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে দুটি করে এবং বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও সিলেটে একটি করে পরিচালক পদ আছে। শুধু ওই বিভাগের ভোটাররাই স্ব স্ব বিভাগের পরিচালক প্রার্থীদের ভোট দেন। অন্যদিকে প্রতিটি বিভাগে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনীত কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে তাদের অন্তর্গত পরিচালক নির্বাচন করেন। আর ক্যাটাগরি তিনে মাত্র একটি পরিচালক পদ। এই পদে সাবেক খেলোয়াড় ও সব সার্ভিসেস, সব বিশ্ববিদ্যালয়, সব শিক্ষাবোর্ড, বিকেএসপি থেকে একজন পরিচালক হতে পারেন।
এই তিন ক্যাটাগরির বাইরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কোটার পরিচালকও আছে। তবে এই কোটায় কোনো নির্বাচন হয় না। তারা সরাসরি নির্বাচিত হন। এই কোটার সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা হলো- ক্লাব, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় যেকোনো কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে যে কাউকে মনোনীত করতে পারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ২০১৩ সালে এনএসসি কোটায় পরিচালক হয়েছিলেন পাপন। এরপর অন্য পরিচালকরা তাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন। তবে গত দুই নির্বাচনে ঢাকা আবাহনীর কাউন্সিলর হিসেবে পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন পাপন। আর একই প্রক্রিয়া বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। উল্লেখ্য, বিসিবির কাউন্সিলর ও পরিচালক হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে বিসিবি ছাড়া সর্বোচ্চ অন্য আরেকটি ফেডারেশনের কাউন্সিলর হওয়া যাবে। তিনটি ফেডারেশনের কাউন্সিলরশিপ থাকলে, তিনি বিসিবির কাউন্সিলর হতে পারবেন না। অন্যদিকে বিসিবির কোনো পরিচালক অন্য কোনো ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটিতে থাকতে পারবেন না। শুধু কাউন্সিলর হতে পারবেন।
একনজরে বর্তমান পরিচালক… জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ : জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। সাবেক ক্রিকেটার, বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থা ক্যাটাগরি : খালেদ মাহমুদ সুজন। ক্লাব ক্যাটাগরি : নাজমুল হাসান পাপন, মাহবুব আনাম, এনায়েত হোসেন সিরাজ, মঞ্জুর কাদের, মনজুরুল আলম, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, গাজী গোলাম মর্তুজা, নজীব আহমেদ, ওবেদ রশিদ নিজাম, সালাহউদ্দিন চৌধুরি, ইফতেখার রহমান মিঠু ও ফাহিম সিনহা। জেলা-বিভাগ ক্যাটাগরি : নাইমুর রহমান দুর্জয়, তানভীর আহমেদ টিটো, কাজী ইনাম, শেখ সোহেল, আকরাম খান, আ জ ম নাসির, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, সাইফুল আলম স্বপন, আলমগীর খান আলো ও শফিউল আলম চৌধুরি নাদেল।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |