প্রচ্ছদ জাতীয় যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কা!

যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের শঙ্কা!

বাংলাদেশে শুক্রবার ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে সারা দেশে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কত মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে- তা নিয়ে কথা বলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রব। তিনি বলেন, এখন আমরা যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারি।

ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকায় তিন, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে দুই, নরসিংদীতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সারা দেশে সাড়ে চারশর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী।

আব্দুর রব বলেন, আজকে একটা প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হতে বেঁচে গেছি আমরা, আলহামদুলিল্লাহ। বাংলাদেশ যে ভূতাত্ত্বিকগত টেকটনিক প্লেটে উপরে রয়েছে সেখানে ৭ বা ৮ রিখটার স্কিলের ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক। কারণ অতীতে এই মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৮৯৭ সালে আসাম ও মেঘালয়ে যে ভূমিকম্প হয়েছিল তখন বাংলাদেশ কেঁপে উঠেছিল ৮ দশমিক ৭ মাত্রার রিখটার স্কেলে। কাছারের (সিলেট অঞ্চলের উত্তরে অবস্থিত জৈন্তিয়া পাহাড়) ভূমিকম্প ৮ মাত্রার ছিল। আরাকানে যে ভূমিকম্প ছিল সেটাও ছিল ৮ দশমিক ৫ মাত্রার।

‘সুতরাং বাংলাদেশে এখন রেকারিং পিরিয়ড (নিয়মিত সময় চক্র) অনুযায়ী শতবর্ষ পেরিয়ে গেছে, সোয়াশ বছর হয়ে গেছে লাস্ট রিখটার স্কেল থেকে’ উল্লেখ করে আব্দুর বর আরও বলেন, তাই আমরা এখন যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারি। সুতরাং আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা বাঞ্ছনীয়।

বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা

বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবির। শুক্রবার দুপুরে তিনি এ বার্তা দেন।

তিনি বলেন, ঢাকা এবং এর আশপাশে বিগত কয়েক দশকে সংঘটিত হওয়া ভূমিকম্পের মধ্যে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প। এ সময় দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৪ থেকে ৫ মাত্রার সামান্য বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের বাইরে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলে একাধিক বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে; যা প্রমাণ করে যে, এটি ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। যেকোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে। ঠিক কবে হবে সেটা আমরা বলতে পারি না।

ভূমিকম্পে মহড়ার বিকল্প নাই

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার বলেন, এর আগে ২০০৩ সালে রাঙ্গামাটিতে ভারত সীমান্তের কাছাকাছি বরকল ইউনিয়নে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এটিও অনেক শক্তিশালী ছিল। তবে ১৯১৮ সালে দেশের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বারবার বলে আসছি ভূমিকম্পে মহড়ার বিকল্প নাই। সরকার ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজের জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেট রাখে, সেখান থেকে দুর্নীতি করতে পারে; কিন্ত যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।