হেড লাইন: প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম) কথা বলেছেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। লাইভে ৫০ বছরের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মেজর ডালিম।
লাইভ চলাকালীন একসময় তিনি তার হাত বের করে দেখান, হাতের একটি আঙুল নেই। কেন নেই হাতের আঙুল, লাইভেই খোলাসা করেছেন তিনি।
এর আগে ইলিয়াস হোসেন এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই সাক্ষাতকারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, রোববার রাতে ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছি, সারাজীবন তার অপেক্ষায় ছিলাম।
ইলিয়াসের বিশেষ লাইভে যুক্ত হতে মেজর ডালিম তার জীবন ও সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে কথা বলেন। লাইভের শুরুতেই ইলিয়াস হোসেন মেজর ডালিমকে যুক্ত করে বলেন, আমাদের জাতির সূর্য সন্তান, যিনি জাতিকে ১৯৭৫ সালে সফলতার পথে নিয়ে গিয়েছিলেন।
সাংবাদিক ইলিয়াসের প্রশ্নের জবাবে মেজর ডালিম বলেন, দেশবাসীকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-জনতাকে, যারা আংশিক বিজয় অর্জন করেছেন, তাদের প্রতি লাল শুভেচ্ছা জানাই। ২৪’এর গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের নায়ক ছাত্র-জনতাকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রসারণবাদী-হিন্দুত্ববাদী ভারত যার কবজায় আমরা প্রায় চলে গিয়েছি। সেই অবস্থান থেকে সেই ৭১’এর মতো আরেকটা স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
টকশোতে এক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ইতিহাস বলতে শুরু করেন মেজর ডালিম। তখন তিনি তার হাত দেখিয়ে জানান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আহত হয়ে বাম হাতের আঙুলে হারিয়েছেন। এছাড়াও তার শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় জখম হয়েছিল।
তিনি বলেন, আর আমি যুদ্ধের সময় তিন চারবার আহত হয়েছি। তার একটা নির্দশন আমার হাতের অবস্থা দেখো। এটা বলে তিনি তার বা হাত উঁচিয়ে দেখান। তখন দেখা যায় তার বা হাতের একটি আঙুল নেই।
৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরেন। মেজর ডালিম বলেন, খুবই স্পর্শকাতর প্রশ্ন। নিজের বাদ্য নিজে বাজানো যায় না। প্রথম কথা, ১৫ই আগস্ট কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এটার সূত্রপাত হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায়।
এই বীর বিক্রম বলেন, যখন সাতদফাতে চুক্তি করে নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিনকে পারমিশন দেওয়া হলো একটা প্রভিশনাল গর্ভমেন্ট গঠন করার। সাতটা ক্লজ পড়ে সাইন করার পর নজরুল ইসলাম ফিট হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন যে, আমরা ক্রমান্বয়ে ভারতের একটা করদরাজ্য-অঙ্গরাজ্যে পরিণত হবো।
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব তার জুলুমের মাত্রা এতোটাই তীব্র করেছিল স্বৈরাচারী আচরণের মতো যে, তখন মানুষ রবের কাছে মুক্তি চাচ্ছিল তার জুলুমের অবসানের জন্য।’
মেজর ডালিম বলেন, ‘মুজিব তো মারা যায়নি, মুজিব একটি সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। সেনা অভ্যুত্থান তো আর খালি হাতে মার্বেল খেলা না। ওখানে দুই পক্ষ থেকেই গোলাগুলি হয় এবং হতাহত হয় দুইপক্ষেই। যেমন মুজিবের পক্ষের কিছু লোক মারা গেল সেভাবে সেনাঅভ্যুত্থানকারী বিপ্লবীদের পক্ষ থেকেও কিছু লোক প্রাণ হারায়। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়ে গেল, তারা ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়ে নিলো।’
তিনি বলেন, ‘মুজিবের মৃত্যুর খবর জানার পর আর বাকশালের পতনের খবর জানার পর শহর বন্দর গ্রামের লাখ লাখ মানুষ আনন্দ মিছিল বের করলো। যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা বা দলগুলো আন্ডারগ্রাউন্ড ছিল তারাও জনসমর্থন নিয়ে রাস্তায় চলে আসে। এভাবেই জনস্বীকৃতি পেয়েছিল ১৫ আগস্টের বৈপ্লবিক সামরিক অভ্যুত্থান।’
২৪ এর বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে মেজর ডালিম বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের বিল্পবীদের, ছাত্র-জনতার বিপ্লবী কর্মকান্ডে যদি কোনো রকম অবদান রাখতে পারি, আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা, যোগাযোগ থেকে…তাহলে আমরা সেটা করতে প্রস্তুত। পিছপা হবো না, ইনশাআল্লাহ। আমরা তাদেরকে শ্রদ্ধা, সালাম এবং বিপ্লবী সালাম, সাথে মন থেকে দোয়া করছি তাদের বিপ্লব যাতে ব্যর্থ না হয়। তারা যাতে বিজয় অর্জন করে সুখী সমৃদ্ধ শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলো তাদের দুর্জ্যেয় ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।’
সূত্র: Ittefaq Digital
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |