প্রচ্ছদ অপরাধ ও বিচার মিল্টনের আশ্রম থেকে সেলিমকে উদ্ধারের পর মিলল অস্ত্রোপচারের দাগ!

মিল্টনের আশ্রম থেকে সেলিমকে উদ্ধারের পর মিলল অস্ত্রোপচারের দাগ!

দেশজুড়ে : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম মিয়াকে (৪০) মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার থেকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে তার কিডনি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আহত সেলিম উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দরিদ্র হাসিম উদ্দিনের ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। এরই মাঝে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে সেলিমের পরিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে তার ছবি দেখতে পায়। তারপর গত মঙ্গলবার সেলিমের মা রাবিয়া, চাচাতো ভাই গ্রাম পুলিশ আব্দুর রশিদ সেলিমের সন্ধানে ঢাকা চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় সেলিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে আনা হয়।

শনিবার (১১ মে) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় একটি ভাঙাচোরা ঘরে শুয়ে আছেন সেলিম। পাশেই বসা মা রাবিয়া খাতুন, বাবা হাসিম উদ্দিন ও চাচাতো ভাই আব্দুর রশিদ। এ সময় কথা হয় মা রাবিয়া খাতুনের সঙ্গে। তিনি কান্না করে বলেন, আমার ছেলের কিডনি নিয়ে গেছে ওই আশ্রয়দাতারা। এ সময় মা সন্তান সেলিমের কাপড় উচিয়ে পেটে অস্ত্রোপাচারের ক্ষতচিহ্ন দেখায়।

বিষয়টি নিয়ে সেলিমের কিডনি নিয়ে যায় এমন সন্দেহে তার পরিবার শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জের ইমিউন নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় আলট্রা করানোর জন্য। তবে ওইদিন সেলিমের পেটে বেশি ব্যথা থাকায় আলট্রা করা সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় তাকে নিয়ে যায় বাড়িতে। এমন অবস্থায় পরে আলট্রা করানো হবে বলে জানান তার পরিবার।

এদিকে মিল্টন সমাদ্দারের কেয়ার থেকে সেলিমের কিডনি খুলে রেখে দিয়েছে এমন কথা এলাকায় ছড়িয়ে গেলে সেলিমের বাড়িতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। এমন খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে সেলিমের বাড়িতে যায় ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, এমন একটি খবর পেয়ে বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবারের লোকজনকে তার চিকিৎসা ও কিছু পরীক্ষা করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে ঘটনাটা কী। তারপর অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।