লালমনিরহাটে হাতিবান্ধা উপজেলায় আলোচিত মানিকুল ইসলাম (২৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। সংস্থাটি জানিয়েছে, ভ্যান চুরির ঘটনার জেরেই মানিকুলকে হত্যা করেছে তার আরেক বন্ধু সিরাজুল ইসলাম (৩৬)। এ ঘটনায় আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে পুলিশ। মানিকুল হত্যার রহস্য উদঘাটনের পার লালমনিরহাট পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ দিয়েছেন লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। পুলিশ বলছে, মানিকুল ইসলামের সঙ্গে ভ্যানচালক বাবলু ও সিরাজুল ইসলামের বন্ধুত্বের সম্পর্ক।
মানিকুল ও সিরাজুল দুজনে মিলেই বাবুলের ভ্যান চুরি করার পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে মানিকুল বাবলুকে চা খাওয়ার জন্য নিয়ে যায়। এই সুযোগে সিরাজুল গোপনে বাবুলের ভ্যানটি সরিয়ে ফেলে। বাবলু সন্দেহ করে যে মানিকুল যেহেতু তাকে চা খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেছে, তাই মানিকুল ভ্যানটি চুরি করেছে। এসময় মানিকুলকে তার ভ্যান বের করে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাবুল। পরদিন সিরাজুল ভ্যান গাড়িটি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেয়। এসময় মানিকুল সঙ্গে থাকলেও এক পর্যায়ে সে পালিয়ে যায়। এ কারণে সিরাজুল একাই ‘চোরের অপবাদ’ সহ্য করছিল। নিজের একার দায় ঘোচানোর জন্য সিরাজুল মানিকুলকে চেয়ারম্যানের কাছে হাজির করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে অনেক বুঝিয়েও চেয়ারম্যানের কাছে হাজির করাতে পারেনি সিরাজুল।
গত ১৮ জানুয়ারি সিরাজুল মানিকুলকে আবারও বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে সিরাজুল তার আরেক বন্ধু দুলুর মাধ্যমে ১৫টি ঘুমের ওষুধ চায়ের সাথে মিশিয়ে মানিকুলকে খাওয়ায়। বড়খাতা রমনীগঞ্জ নামক জায়গায় ভুট্টাক্ষেতে পৌঁছালে মানিকুল ও সিরাজুলের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মানিকুল সিরাজুলকে মারধর করে। সিরাজুল রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে ব্যাগে থাকা ধারালো ছুরি বের করে মানিকুলকে আঘাত করে। মানিকুল ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। সিরাজুল ভিকটিম মানিকুলকে ধারালো ছোরা দিয়ে গলায় পোচ দিয়ে দেহ হতে মাথাটি বিছিন্ন করে। তারপর বিছিন্ন মাথা, মোবাইল, ছোরা, রক্তমাখা জ্যাকেট দালালপাড়ায় নিয়ে গিয়ে গর্ত খুড়ে মাথাটি পুতে রাখে এবং অন্যান্য আলামত ব্যাগের মধ্যে মাটি ভরে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দিয়ে ভোরের দিকে বাড়িতে চলে আসে।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের তদন্ত দল, গোপন সূত্রে জানতে পারে সিরাজুল ইসলাম (৩৬) বাড়িতে এসেছে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করে অবৈধপথে ভারতে চলে যাবে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) উপজেলার সিঙ্গীমারি ইউনিয়নের পাইকারটারি এলাকা থেকে সিরাজুল হইলাম (২৪) আটক করে হাতিবান্ধা থানা পুলিশ। পরে সিরাজুল ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালত সিরাজুলের জবানবন্দি গ্রহণ করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ওই উপজেলা ফকিরপাড়া ইউনিয়ন থেকে মানিকুলের মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দালালপাড়া এলাকা থেকে মাথা, মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা ছুড়ি উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এসব কাজে সিআইডির একটি দল থানা পুলিশকে সহায়তা করে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |