প্রচ্ছদ জাতীয় মতিউরের মেয়ের বিলাসী জীবন, বাবাকে নিয়ে হুংকার

মতিউরের মেয়ের বিলাসী জীবন, বাবাকে নিয়ে হুংকার

ছাগলে এক সাম্রাজ্যের পতন। এটি একটি ব্যক্তিগত সাম্রাজ্য। যেখানে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও বিলাসী জীবনের গল্প। যে গল্পের এক পর্বে আছে রাষ্ট্রের টাকা আত্মসাৎ করে যে সন্তানদের জন্য সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বাবা মতিউর। সেই সন্তান আজ বাবার বিরুদ্ধে। বাবার বিচার চাইছে। বলছে বাবাকে সে ছাড়বে না। আরেক সন্তানত ছাগলকাণ্ড ঘটিয়ে বাবাকে দৌড়ের ওপর রাখছে।

জানা যায়, সম্প্রতি ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউরের কানাডা প্রবাসী মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা তার স্বজনের কাছে ভয়েজ মেসেজে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম, বাবারে আমি ছারুম না। সে আমারে ধোঁকা দিছে (দিয়েছে), আমার মারে (মাকে) ধোঁকা, আমার ভাইরে ধোঁকা দিছে। আমি তারে ছারুম? জীবনেও না। ’

এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিশ্বখ্যাত ম্যাকলারেন ব্র্যান্ডের বিলাসবহুল গাড়ির ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের প্রথম পক্ষের মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা। যে বাবার কল্যাণে কানাডায় তার বিলাসী জীবন, সেই বাবাকেই এখন ছেড়ে কথা বলছেন না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাগলকাণ্ড ভাইরাল হওয়ার প্রসঙ্গে ইপ্সিতা তার ভয়েজ মেসেজে বলেন, ‘মানুষের দোষ তো নাইরে ভাই। দেশের মানুষ তো আসলেই কষ্ট করে। এই লোকটা আমার মারে এত বড় চিট করল ভাই। আমি এক মিনিট পরপর আমার মার (মায়ের) সঙ্গে কথা বলতাছি (বলছি)।

আমার মা হাউমাউ করে কান্দে (কাঁদে)। আমার ভাই কান্দে। আমার ভাই আমারে বলে, বাপ আমাদের কখনো ভালোবাসে নাইরে আপু। ভালোবাসলে সে এইভাবে চিট করত না। এখন কী করব জানিনারে ভাই। আমার আর ভাল্লাগে (ভালো লাগে) না। মানুষের রাগ তো আমি বুঝতে পারছি। বিকজ আপনারা অনেক ভুক্তভোগী। এই…সরকার। আল্লাহ মাফ করুক, আসলেই ভুক্তভোগী। কিন্তু আমার ফ্যামেলি, আমার, আমার মা-ভাইয়ের কোনো দোষ এখানে ছিল না ভাই। তার আছে অনেক। আমি জানি টাকাপয়সাও ইলিগ্যাল না। তার ভালো ফ্যামেলি। বিয়াও করছিল ভালো ফ্যামেলির মাইয়া (মেয়ে)।

তাইলে ভালো ফ্যামেলির মাইয়ারে বিয়া (বিয়ে) কইরা (করে) তুই রাখতে পারলি না। তোর এত খারাপ লাগছে, আমার মারে ছাইড়া তুই চইলা যাইতি। তুই আমাদের চিট করলি কেন। তুই তোর চাকরি বাঁচাইতে পারবি, টাকা বাঁচাইতে পারবি। কিন্তু তুই যে আমাদের ধোঁকা দিছোস, এইটা আমরা কী করুম। আমরা কই যামু (যাব), কারে মুখ দেখামু (দেখাব)।’

ভয়েজ মেসেজের আরেকটি ক্লিপে তিনি বলেন, ‘আমার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটা খাইয়া দিছে হ্যাকারে। ইভেন আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবলেম করতাছে। মানুষ আমার পেছনে লাগছে কেন বুঝলাম না। ইভেন আমার পেজে…এগুলো কে করাচ্ছে? আমি কার ক্ষতি করলাম।

আমার মার অ্যাকাউন্টে প্রবলেম করতাছে। আমার মা তো একজন উপজেলা চেয়ারম্যান। এখানে না, কেউ একজন মাস্টার গেম আছে, মানে কেউ একজন আমাদের সঙ্গে গেম খেলতাছে। আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর। আপনি পলিটিক্সে ছিলেন। আপনি বোঝেন না। মনে হইতাছে আমাদের সঙ্গে গেম খেইলা ওই ফ্যামেলি সামনে আসতে চাইতাছে।

বেটার তো আসলেই টাকাপয়সা আছে। তার পুরা চৌদ্দ গোষ্ঠী ভালো বিজনেজ কইরা যাইতেছে। তার ভাই ভালো বিজনেজ করে। এক্সপোর্ট-ইম্পোর্টের বিজনেস। তার ছোট ভাইয়ের তিন-চারটা গার্মেন্ট। সব নিজের। তার তো কিছুর অভাব নাই।

আমার কেন জানি মনে হয়, সম্পত্তির জন্য ওই সেকেন্ড ফ্যামেলি সামনে আসতে চাইছে। বাপে মনে হয় বলছে না, এখন সে আমাদের অ্যাকিউস কইরা কইরা এই কাহিনিটা করছে। নাইলে কেন করবে। এখন কয় ছাগল সে কিনে নাই। ছাগল বউয়ের জন্য কিনছে, বউ পছন্দ করছিল। অথচ শুরুতে কইছিল বাবা পছন্দ করছে। শুরু কী করছে পোলায়।’ মতিউরের প্রমোশন, সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পারিবারিক ড্রামার অনেক তথ্য ফাঁস হয়েছে ইপ্সিতার ভয়েজ মেসেজে।