
যেকোনো আদালত ঘোষিত ফেরারি আসামি নির্বাচন করতে পারবেন না- এমন অযোগ্যতার বিধান, জামানত ৫০ হাজার টাকা, ভোটারপ্রতি ১০ টাকা হারে নির্বাচনী ব্যয়ের বিধানসহ একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব এনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন আইন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সরকারের কাছে পাঠানো সংস্কারের সার্বিক বিষয়ে তুলে ধরেন।
নির্বাচন কমিশন এসব প্রস্তাব পাঠালেও কোনটা থাকবে, কোনটা থাকবে না তা নির্ভর করবে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের ওপর। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে সরকারের সায় পেলে রাষ্ট্রপতি সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করবে।
ইসি’র একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রথমবারের মতো ফেরারি আসামিদের ভোটে অযোগ্য ঘোষণার বিধান যুক্ত করা হয়। কোনো আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে অযোগ্যতার বিধান রয়েছে বিদ্যমান আইনে।
নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, যেকোনো ফৌজদারি মামলায় ফেরারি আসামি হলে অযোগ্য হবেন। অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে এটা করতে চাইনি। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এটা করা হয়েছে। সামনে যদি মিসইউজ হয়, তবে আবার এটা রিভিউ করতে হবে।
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করেছে। আলোচনায় নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট হয়েছে এবং মনে করেছে এমন বিধানটি রাখা ভালো হবে। সামনে যদি এটির অপব্যবহার হয় তখন প্রয়োজনে আবার সংশোধন করা যাবে।
এই নির্বাচন কমিশনার জানান, এবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে ইসি। অতীতে স্থানীয় অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সুযোগ থাকলেও এবার জাতীয় নির্বাচনে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিধান রাখা হয়নি। নির্বাচনী ব্যয় না বাড়ালেও ভোটার প্রতি ১০ টাকা হারে আসনের ভোটার সংখ্যার সমান ব্যয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে ২৫ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ ছিল প্রত্যেক প্রার্থীর। এবার ভোটার প্রতি ১০ টাকা হারে সুযোগ দেয়ায় ঢাকা ১৯ আসনে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ ভোটারের জন্য ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করার সুযোগ থাকছে। এই নির্বাচন কমিশনার জানান, অনিয়ম হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা একটি বা একাধিক কেন্দ্র বা পুরো আসন বাতিল করতে পারবে। কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হবেন সর্বেসর্বা। ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন কখন ভোট শুরু করবেন, আর কখন বন্ধ করবেন।
সানাউল্লাহ বলেন, আগে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ছিল। মাঝখানে এটা সংশোধন করে বিধান করা হয়েছিল যে ভোট শুরুর পূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি দেখবেন, তারা রিপোর্ট দিলে ভোট শুরু করবেন। আমরা এটাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে গেছি। এতে কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হবেন সর্বেসর্বা। তিনি আরও জানান, মিডিয়াকর্মীসহ কে কতোক্ষণ ভোটকক্ষের ভেতরে থাকবেন তা নির্ধারণের ক্ষমতা প্রিজাইডিং অফিসারকে দেয়া হয়েছে।
সূত্র: মানবজমিন










































