প্রচ্ছদ হেড লাইন ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম

ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম

গণমাধ্যমে আগুন দেয়া নিয়ে একটি মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। একইসাথে তার বক্তব্যের সংশোধনীও প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) মাহফুজ আনামের বরাত দিয়ে ডেইলি স্টারে উল্লেখ করা হয়, গত ২১ ডিসেম্বর বিএনপি আয়োজিত সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বক্তৃতাকালে আমি (মাহফুজ আনাম) দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে বাংলাদেশে এই ধরনের প্রথম ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছিলাম।

তিনি বলেন, এরপর আমার নজরে এসেছে যে অতীতে সংবাদমাধ্যমে অগ্নিসংযোগের আরো ঘটনা ঘটেছে।

যদিও সেখানে এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বা জীবন ও সম্পত্তির জন্য এতটা হুমকি তৈরি হয়নি।
মাহফুজ আনাম বলেন, তথাপি, আমি আমার ভুলের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং এই সংশোধনী নোটটি আমরা অনলাইনে প্রচারিত প্রতিবেদনের সাথেও সংযুক্ত করা হবে।

গত ২১ ডিসেম্বর মাহফুজ আনাম বলেছিলেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোনো গণমাধ্যমের কার্যালয়ে আগে কখনো আগুন দেয়া হয়নি এবং প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারেই প্রথমবারের মতো এমন হামলার ঘটনা ঘটল।

তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন এমনটা ঘটল এবং গণমাধ্যম কী অপরাধ করেছে যে তাদের এমন হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে হলো।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী শাসনামলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল দৈনিক নয়া দিগন্তে। সেদিন বেলা ২টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় জামায়াত-শিবিরের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি নটর ডেম কলেজের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় মতিঝিলের শাপলা চত্বর এবং আরামবাগ উভয় দিক থেকে পুলিশ মিছিলটি ঘিরে ফেলে। এ সময় উভয় দিক থেকে পুলিশ মিছিলটিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

এ সময় জামায়াত-শিবিরের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন ওই এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। পুলিশের অ্যাকশনে এক পর্যায়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা আশপাশের রাস্তা ও গলি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে।

ঘটনার ঠিক ওই সময়টাতে নয়া দিগন্তের মূল ফটক বন্ধ ছিল। ওই এলাকায় পুলিশের অ্যাকশন শেষ হলে হঠাৎ করেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত নয়া দিগন্ত কার্যালয় লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কার্যালয়ের সামনে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এক পর্যায়ে তারা গাড়িতে এবং নয়া দিগন্তের প্রেসে অগ্নিসংযোগ করে। মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলা শুরু করে। এতে আশপাশে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কার্যালয়ের ভেতরে এসময় যারা পত্রিকার নানা কাজে যুক্ত ছিলেন তারা আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন, কেউ কেউ ছাদে উঠে যান।

অগ্নিসংযোগের পরপরই বাইরে থাকা পত্রিকার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারণ লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। আগুন প্রেসে ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে রাখা ১৫-১৬টি কাগজের রোলসহ বিপুল মুদ্রিত কাগজ পুড়ে যায়।

সুত্র: কালের কণ্ঠ