
মিয়ানমারের সংঘাতপূ্র্ণ রাজ্য রাখাইন ঘিরে এবার নতুন করে তৎপর ভারত। সমুদ্র ও সড়কপথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করতে কলকাতা থেকে রাখাইনের সিত্তে বন্দর পর্যন্ত বিকল্প পথ নির্মাণে তড়িঘড়ি রূপরেখা তৈরি করেছে নয়াদিল্লি। আর এই কৌশলেই বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে নতুন উদ্বেগ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানায়, ১৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের জাতীয় সড়ক তৈরি হবে শিলং থেকে শিলচর পর্যন্ত, যার একটি শাখা পৌঁছাবে মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা পাঁচটি গ্রামে। এরপর সমুদ্রপথে কলকাতা থেকে সিত্তে, সেখান থেকে কালাদান নদী হয়ে জলপথে পালেটোয়া এবং সড়ক পথে মিজোরামের জরিনপুই পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
এদিকে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ এখন কৌশলগতভাবে উপেক্ষিত হয়ে পড়ছে ভারতের কাছে। অথচ আগে নানান ইস্যুতে ভারত-নির্ভর বাংলাদেশ হঠাৎই একঘরে হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে বলেছিলেন, “উত্তর-পূর্ব ভারত স্থলবেষ্টিত, আর বাংলাদেশই তাদের একমাত্র সমুদ্রপথের অভিভাবক।” ওই মন্তব্যের পরই যুদ্ধকালীন গতিতে ভারতের এই বিকল্প পথ প্রকল্প সামনে আসে।
তবে বাস্তবতায় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে থাকা রাখাইন কি আদৌ ভারতের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ দেবে? কারণ ৮০ শতাংশ রাখাইন এখন জান্তা সরকারের হাতে নেই।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রকল্প যদি বাস্তবায়ন হয়, তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন ভৌগোলিক ভারসাম্য তৈরি হতে পারে, যেখানে বাংলাদেশ একপ্রকার কোণঠাসা হয়ে পড়বে।