লিবিয়ায় বন্দিদশা থেকে রবিউল ইসলাম (২৩) নামের এক যুবক বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কাছে। গত ৭ জুলাই রবিউল তার মা নাছিমা বেগমের ইমু নম্বারে পাঠানো একটি ম্যাসেজে এ আকুতি জানান।
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার কারিকোনা গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে রবিউল প্রথমে গত ২ জুলাই এবং পরে গত ৭ জুলাই তার মায়ের ইমু নম্বারে ম্যাসেজ পাঠান।
ম্যাসেজে লেখা ছিল, ‘বাবা আমি রবিউল। আমি ত্রিপোলি মাতার জেলে আছি। আমার সাথে আরও ৬০ জন বাংলাদেশি। সবাই অনেক কষ্টে আছি। এখানে বেশিদিন থাকলে এমনি মরে যাব। এখান থেকে আমাদের দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করো। এখানে থেকে আমাদের দেশে নিয়ে যেতে পারবে চুনারুঘাটের এমপি ব্যারিস্টার সুমন ভাই। যত তাড়াতাড়ি পারো সুমন ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করো। সুমন ভাই যদি চায় আমাদের ৬০টা প্রাণ বাঁচাতে পারে। যত তাড়াতাড়ি পারো সুমন ভাইয়ের সাথে কথা বলবা। আর তা না হলে পুলিশ আমাদেরকে মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দিবে। সুমন ভাই আপনি আমাদের বাঁচান। আপনি ছাড়া আমাদের আর কোনো ব্যক্তি নাই। আপনি আমাদের শেষ ভরসা।’
রবিউলের পরিবার জানায়, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই ৬০ দিনের ভ্রমণ ভিসায় বিমানযোগে দুবাই যান রবিউল ইসলাম। সেখানে আবদুর রহমান নামে স্থানীয় এক অধিবাসীর সাথে পরিচয় হয় তার। এরপর ওই বছরের ১৫ আগস্ট আবদুর রহমান ভাল বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে লিবিয়ায় নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে ৬ মাস চাকরি করেন রবিউল। পরে, লিবিয়া থেকে ইউরোপ যেতে চাইলে আহসান খান নামের বাংলাদেশি এক দালালের হাতে রবিউলকে তুলে দেন আবদুর রহমান। আহসান রবিউলের কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি অনুযায়ী টাকা না পেলে তাকে হত্যারও হুমকি দেন আহসান। এই খবর পরিবারের কাছে পৌঁছালে ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের মা নাছিমা বেগম ২ লাখ টাকা সেখানে পাঠান। কিন্তু ওই টাকা পেয়েও আহসান রবিউলকে মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেন। চলতি বছরের গত ১২ জুন লিবিয়ার বেনগাজী হতে রবিউলসহ ৬০ বাংলাদেশিকে সেদেশের রাজধানী ত্রিপোলি মাতার জেলে পাঠানো হয়। সেখানে চরম নির্যাতনে শিকার হন রবিউল।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, ছেলে রবিউলকে লিবিয়ার বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে নাছিমা বেগম সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপির নিকট আবেদন করেন। তিনি আবেদনটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বরাবরে প্রেরণ করেন। গত ৪ জুলাই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বন্দী রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি পাঠায়।
রবিউলের বাবা সিরাজুল হক বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমাদের সাথে আমার ছেলের কোনো যোগাযোগ নেই। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি পাঠানো হলেও এখনো আমরা কোনো খবর পাচ্ছি না। ব্যারিস্টার সুমন সাহেবের সাথেও কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছি না। জরুরি ভিত্তিতে রবিউলসহ তার সাথে থাকা বন্দিদের উদ্ধার না করলে করুণ পরিণতি ঘটতে পারে।’
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |