পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রায় চার ঘণ্টার তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির ভেতরে থাকা জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করেছে তারা । বাড়িটিতে বিলাসবহুল কিছু পাওয়া যায়নি জানিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, ভেতরে যেসব জিনিসপত্র ছিল, তা সবই ‘লোকাল প্রোডাক্ট’।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১টায় জেলা প্রশাসকসহ দুদকের একটি টিম ওই বাড়িটিতে প্রবেশ করে। তল্লাশির সময় সাংবাদিকসহ অন্য কেউ যাতে সেখানে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বাড়ির প্রধান ফটকে আনসার ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিন বিকেল ৫টায় তল্লাশি শেষ হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শফিকুর আলম বলেন, ‘এটি একটি আবাসিক ভবন। একটা পরিবার থাকলে যেই রকম জিনিসপত্র পাওয়া যায়, সেগুলোই পেয়েছি আমরা । রান্নাঘরে চায়ের কাপ, আসবাবপত্র, টিভি—এই ধরনের জিনিসপত্র আমরা পেয়েছি। এসবের তালিকা আমরা করেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ যেসব আসবাবপত্র পাওয়া গেছে সেগুলোও সাধারণ মানেরই মনে হয়েছে। সবকিছুই লোকাল প্রোডাক্ট ছিল। ওয়ালটনের টিভি ও এসি ছিল। কিছু শোপিস, কিছু বইপত্র পেয়েছি, সোফা সেটও ছিল।’
তল্লাশিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেয়ার কারণ জানতে চেয়ে এক প্রশ্নে এডিসি শফিকুর বলেন, ‘যাতে আমরা তথ্যগুলো নির্ভুলভাবে কালেক্ট করতে পারি, সেজন্যই সাংবাদিকদের প্রবেশ বন্ধ ছিল। এছাড়া অন্য কোনো কারণ ছিলোনা’
তবে বেনজীরের বাড়িটিতে থাকা কোনোকিছুই জব্দ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ তল্লাশিতে যেসব মালামাল পাওয়া গেছে সেগুলো আমরা জব্দ করব না। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এখানে কী কী আছে তার তালিকা আমরা সেখানে পেশ করব।’
জানতে চাইলে দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী বলেন, ‘এই বাড়িতে কী কী পাওয়া গেল তার তালিকা করেছি আমরা। এর আগে এই বাড়িতে ডিজিটাল লক থাকায় প্রবেশ করতে পারিনি। আজ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই তালা খোলা হয়েছে।’
এর আগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের মাধ্যমে অর্জিত সাবেক এ আইজিপির সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত শনিবার বিকেলে বাড়িটিতে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও দুদকের সমন্বিত একটি দল। পরে বাড়িটির সামনে ‘ক্রোক বিজ্ঞপ্তি’ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্বাচলের দক্ষিণবাগ এলাকার গুতিয়াব মৌজায় পুলিশের আনন্দ হাউজিং সোসাইটির ছয়টি প্লটের ২৪ কাঠা জমির ওপর সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে এ বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। চারপাশে কাঁটাতারসহ সীমানা দেয়াল দেওয়া রিসোর্টের ভেতরে একটি বিলাসবহুল ‘ডুপ্লেক্স বাড়ি’ রয়েছে। প্রশাসনের সাঁটানো ‘ক্রোক বিজ্ঞপ্তিতে’ রিসোর্টটির মালিক হিসেবে বেনজীরের কন্যা ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীরের নাম উল্লেখ রয়েছে।
শনিবারের ওই অভিযানেও নেতৃত্ব দেন শফিকুর আলম। উপস্থিত ছিলেন মইনুল হাসান রওশনীও।
অভিযান শেষে শফিকুর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘ ঢাকার স্পেশাল জজ আদালতের নির্দেশে সাভানা ইকো রিসোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে সম্পত্তিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা এ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।’
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |