গাজীপুরের শ্রীপুরে কন্যাশিশুকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন এক মা। এতে মা ঘটনাস্থলেই নিহত হন ও গুরুতর আহত হয় শিশুটি। পরে শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে উপজেলার সাতখামাইর রেলওয়ে স্টেশনের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মায়ের নাম নাসরিন আক্তার (২৮)। তার মেয়ের নাম রওজাতুল জান্নাত রাফসা (১৪ মাস)। রাফসা তার দ্বিতীয় সন্তান। বেলাল আহমেদ নাঈম (১৪) নামে তার আরো এক সন্তান রয়েছে।
নাসরিন আক্তারের স্বামীর নাম মো. রাসেল মিয়া। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার টাঙ্গাবো গ্রামে।
তারা শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাসেল শ্রীপুর পৌর এলাকায় বৈরাগীরচালায় কালার অ্যান্ড ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিক।
রেলওয়ের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতখামাইর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করছিল। এ সময় নাসরিন আক্তার মেয়েশিশুটিকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেন কাছাকাছি এলে তিনি সামনে ঝাঁপ দেন। এতে ইঞ্জিনের আঘাতে নাসরিন আক্তার শিশুসহ প্রায় আট থেকে ১০ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শী আনোয়ার আজাদ নয়ন জানান, ঘটনার প্রায় দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে ওই নারী মারা যান। গুরুতর অবস্থায় আশপাশের মানুষজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এদিকে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্বজনরা ওই নারীর মরদেহ নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া কুলসুম বেগম বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে মো. রাসেল মিয়া কাজে যাচ্ছিলেন না। তা নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল বলে জানতাম।’
নিহতের ছেলে বেলাল আহমেদ নাঈম জানায়, তার বাবার সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বোনকে কোলে নিয়ে মা আজ সোমবার সকাল ৬টার দিকে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা জানতে পারে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে কোলে শিশুটিকে নিয়ে রেললাইনের পাশে বড় একটি আমগাছের নিচে বসে ছিলেন ওই নারী। সেখানে বসে শিশুটিকে বুকের দুধ পান করান। এর একপর্যায়ে শুকনো পাতা জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহান। পরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি কাছাকাছি চলে এলে কোলে শিশু নিয়ে সামনে ঝাঁপ দেন।’
শ্রীপুর রেলওয়ের রেলস্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, ‘শিশুবাচ্চাসহ এক মা চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন বলে শুনেছি। রেলওয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |