রাজনীতি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হতে যাচ্ছেন বলে একাধিকবার হাকডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নেতারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সংসদের প্রধান বিরোধী দল হওয়া তো দূরে থাক দুটি দলের একজন প্রার্থীও কোনো আসনে বিজয়ী হননি। দল দুটির সব প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হতে পারে।।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সারাদেশে ২৯৯টি আসনে একযোগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। এরপর গণনা শুরু হয়।
ভোটের চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২২৫টি আসনে, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি এবং ৬১টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া একটি আসনের (ময়মনসিং-৩) ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রার্থী দিয়েছিল ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপি। তবে ভোটের মাঠে দলটির ১৩৫ প্রার্থীর কেউই জয়ের দেখা পাননি। প্রতিটি আসনে তাদের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। দলটির বেশ কয়েকজন প্রার্থী ১০০ ভোটেরও কম পেয়েছেন। এমনকি দলটির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রয়াত মন্ত্রী নাজমুল হুদা প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল বিএনপির প্রথম সম্মেলনে দলটির চেয়ারম্যান হন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী। এবারের নির্বাচনে সিলেট-৬ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বেসরকারিভাবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। আর সোনালী আঁশ প্রতীকে মাত্র ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন শমসের মুবিন।
এ ছাড়া তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। শুরু থেকে নিজেকে শক্ত প্রার্থী হিসেবে দাবি করলেও বর্তমানে জামানত হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন তিনি। আসনটিতে টানা চতুর্থবারের মতো জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। আর বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমুর পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট। অথচ নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে তৈমুর আলম খন্দকার একাধিকবার বলেন, তৃণমূল বিএনপি এবার সংসদের প্রধান বিরোধী দল হবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ৫৩ আসনে প্রার্থী দিলেও কোনোটিতেই জিততে পারেনি। দলটির প্রায় সব প্রার্থী জামানত হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। এমনকি দলটির শীর্ষ নেতারাও ধরাশায়ী হয়েছেন। অথচ এই দলটির নেতারাও সংসদের প্রধান বিরোধী দল হওয়ার আশার কথা শুনিয়েছিলেন।
এবারের নির্বাচনে বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মো. আবু জাফর ফরিদপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে নৌকার প্রার্থী আবদুর রহমানের সঙ্গে পেরে ওঠেননি তিনি। তিনি ভোট প্রাপ্তির হিসাবে তৃতীয় হয়েছেন।
এ ছাড়া বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান চাঁদপুর-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আসনটিতে মাত্র ১ হাজার ৭৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন তিনি। অথচ গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশানে দলের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহ্জাহান বলেছিলেন, ‘প্রথমবারের মতো বিরোধী দলে যাব।’
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |