প্রচ্ছদ জাতীয় বিমানের রং করা শিখতে প্রশিক্ষণের জন্য পাটানো হবে সিঙ্গাপুরে

বিমানের রং করা শিখতে প্রশিক্ষণের জন্য পাটানো হবে সিঙ্গাপুরে

প্রকৌশল বিভাগের নিজস্ব জনবল ব্যবহার করে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি এয়ারক্রাফটের সি-৮ চেক এবং ফুয়েল ট্যাংকের সংযোজন সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানের হ্যাঙ্গার কমপ্লেক্সে এ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, একটি বিমান ৩ হাজার ঘণ্টা ওড়ার পর যে চেক করা হয়, সেটি সি-চেক। এটি বেশ জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। সাধারণত, প্রতি ৮ বছর পর-পর এই চেক করা হয়।

আগে, সাধারণত বিদেশি উড়োজাহাজ কোম্পানি বা সংস্থা থেকে এ ধরনের চেক সম্পন্ন করা হতো। বিমান বলছে, এই সি-চেক নিজেরা সম্পন্ন করায় অন্তত দুই মিলিয়ন ডলার অর্থ সাশ্রয় হয়েছে।

প্লেনের এক টিকিটে আরেকটি ফ্রি দিচ্ছে ফার্স্টট্রিপ
বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেল পাকিস্তানের ফ্লাই জিন্নাহ
বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, “বিমানের এই হ্যাঙ্গার যেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের হস্তান্তর করা হয়, সেদিন অস্ট্রেলিয়ানদের কাছ থেকে আমি এটা গ্রহণ করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে আপনারা শুনেছেন ডিসি-১০ (উড়োজাহাজ)-এর তিনটি সি-চেক আলিটালিয়াকে (ইতালিয়ান উড়োজাহাজ সংস্থা) আমি সম্মত করিয়েছিলাম। প্রথমে একটা হবে রোমে। সেখানে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা যাবেন এবং অংশগ্রহণ করবেন। দ্বিতীয়টাও এখানে হবে আলিটালিয়ার কম লোক কাজ করবে। আমাদের বেশি সংখ্যক লোক কাজ করবে। আর, তৃতীয়টা আমাদের লোক করবে, আলিটালিয়া সুপারভাইস করবে।

তিনি বলেন, সেইভাবেই এখানে ডিসি-১০ এর সি-চেক হয়েছিল। এটার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত এবং আমি খুবই আনন্দিত যে আমাদের সহকর্মীরা এত টাকা সেভিংস করে এই কাজটি এখানে সম্পন্ন করেছেন।

চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বড় বিমানগুলোরও রং করতে হবে। এগুলো এখন একটু মলিন লাগে। এজন্য তিনজন প্রকৌশলীকে সিঙ্গাপুর পাঠাবো প্রশিক্ষণের জন্য। যাতে তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে এই কাজটা এখানেই করতে পারেন। তাতেও আমাদের সেভিংস হবে, আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

প্রকৌশল এবং উপাদান ব্যবস্থাপনা পরিদপ্তর বিভাগের পরিচালক এয়ার কমডোর মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ পাঁচ মাসের পরিশ্রমের পর আমরা এই এয়ারক্রাফটের সি-চেক সম্পন্ন করেছি। লাস্ট এই এয়ারক্রাফটের সি-চেক হয়েছিল ২০১৭ সালে ইন্দোনেশিয়াতে। কিন্তু, এবার আমাদের প্রকৌশল বিভাগের চেষ্টা ও বোয়িং-এর কারিগরি সহায়তায় আমরা সি-চেকটা সম্পন্ন করেছি।

তিনি বলেন, “বিদেশে এই চেকটি সম্পন্ন করতে গেলে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা লাগত। আমার কাছে হিসাব আছে, এই এয়ারক্রাফটের সি-চেক সম্পন্ন করতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ডলার; কেমিক্যাল ও অন্যান্য জিনিসে আরও ৭৫ হাজার ডলার, অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে প্রায় ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখন যে চেক সম্পন্ন হয়েছে, আশা করছি ন্যূনতম ৫ থেকে ৬ বছর এই এয়ারক্রাফটি ফ্লাই করতে পারবে।”

সি-চেক করা এই এয়ারক্রাফটের ম্যানুফ্যাকচারিং করা হয় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। বর্তমানে যার বয়স প্রায় ২৪ বছর। এই উড়োজাহজটি ৬১ হাজার ৬৮৩ ঘণ্টা এবং ৩৫ হাজার ১২৫ ফ্লাইট সাইকেল উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে। সি-চেক একটি ব্যাপক ইন্সপেকশন; রিপেয়ার এবং মডিফিকেশন প্রক্রিয়া। এটি উড়োজাহাজের ধরনের ওপর নির্ভরশীল। এই কঠিন কাজ সম্পাদনের জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, দৃঢ়তা ও অঙ্গীকারের প্রয়োজন।

অনুষ্ঠান শেষে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এয়ারক্রাফটির ভেতরে ঘুরে দেখেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. সাফিকুর রহমান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।