
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খুলনার পাঁচটি আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। তবে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনটিতে এখনও প্রার্থী দেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যে বিএনপির কমপক্ষে তিনজন হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে তৎপর রয়েছেন।
এই অঞ্চলের অর্থনীতি নির্ভর করে কৃষি, মৎস্য ও সুন্দরবনের ওপর। প্রায় তিন লাখের কাছাকাছি ভোটার রয়েছেন আসনটিতে। সর্বশেষ নির্বাচনে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারই বেশি ছিল এখানে। এছাড়া শতকরা প্রায় ৪৫ ভাগ রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট। আসনটিতে ৯ বার আওয়ামী লীগ, দুইবার বিএনপি ও একবার জাতীয় পার্টির সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের সংসদ সদস্য ছিলেন ৭ বার।
আগামী সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে বিজয়ী হতে চায় বিএনপি। ইতোমধ্যে দলটির একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। দলের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণাসহ ব্যক্তিগত প্রচারণাও করছেন তারা। জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান পাপুল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক নেতা পার্থ দেব মন্ডল আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তারা প্রত্যেকেই সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
আসনটির একাধিক ভোটার বলেন, বিগত দিনগুলোতে এখানে সংসদ-সদস্যরা শুধু আমাদের আশার বাণী দিয়ে গেছেন। এলাকার রাস্তাঘাট, নদী ভাঙন, সুপেয় পানি ও কর্মসংস্থানের অভাবসহ নানা সংকট রয়েছে। আগামী নির্বাচনে আমরা এমন একজন প্রার্থী চাই, যিনি আমাদের দুঃখ-দুর্দশা বুঝবেন। আমাদের পাশে থাকবেন। কথায় নয়, কাজেই প্রমাণ করবেন।
আসনটিতে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিযোগিতা হতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে এখানে জামায়াতের প্রার্থী দুই দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী আসনটিতে জামায়াতের সংসদ-সদস্য প্রার্থী হিসাবে বেশ আলোচনায় আছেন।
জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অজস্র মামলা মোকাবিলা করেছি ও জেলে থেকেছি শুধু দলের জন্য। ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালে আসনটিতে ধানের শীষের প্রার্থী হিসাবে আমি নির্বাচন করেছি। মুসলমান ভোটারের পাশাপাশি হিন্দু ভোটার আমার বড় ভোট ব্যাংক। তিনি আরও বলেন, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দিতে ভুল করে, তাহলে এই সিটটি বিএনপি হারাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা জিয়াউর রহমান পাপুল যুগান্তরকে বলেন, এই এলাকার মানুষকে উজ্জীবিত করার বার্তা ঠিকমতো পৌঁছে দিতে পারেননি বিগত দিনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা। এলাকার মানুষের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। তাদের যে স্বপ্ন আমি দেখিয়েছি তারা মনে করে আমি ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসাবে নির্বাচিত হলে তাদের উপকার করতে পারব। দল মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্ব দেবে বলে আমি আশা করি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও যুবদলের সাবেক সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পার্থ দেব মন্ডল বলেন, আমি ৫ আগস্টের পরের নেতা না। সব সময় দাকোপ-বটিয়াঘাটার মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে এবং আমি একাধিকবার জেলও খেটেছি। আমাকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দিলে আশা করি নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘবে কাজ করতে পারব।
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি বড় দল। সংসদ-সদস্য মনোনয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তেই হবে। দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তাকে নিয়েই আমরা কাজ করব। খুব দ্রুতই এই আসনে প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে।
সূত্র : যুগান্তর













































