প্রচ্ছদ সারাদেশ বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০, নেপথ্যে যে কারণ

বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০, নেপথ্যে যে কারণ

সারাদেশ: নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় একটি দোকান ঘরের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের দুইজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পৌর শহরের বাজারে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনায় আহতরা কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ময়মনসিংহে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- শাওন (৩৩), রফিকুল (৪০), বাবু (২১), রফিকুল ইসলাম (৫৯) ও রনি (২২)। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও রনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া মধ্য বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামে এক ব্যক্তির একটি দোকান ঘরের জায়গা বুধবার রাতে দখল করতে যান পৌর শহরের দিগদাইর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারের বড় ভাই আল আমিন খন্দকার ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল খন্দকার। একই সময় সোহেল আমিনের পক্ষ নিয়ে ওই দোকানে যান নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালীর ভগ্নীপতি উপজেলা বিএনপি সভাপতি জয়নাল ভূঁইয়ার বড় ভাই এবং উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ভূঁইয়ার বাবা উপজেলার চকবাট্টা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া। একপর্যায়ে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে যুবদল নেতা নাসির খন্দকারের পক্ষে পৌরসভার দিগদাইর গ্রামের লোকজন এবং বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার পক্ষে উপজেলার চিরাং ইউনিয়নে চকবাট্টা গ্রামের লোকজন রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে জড়িত হয়। এতে অন্তত উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হন।

নাসির খন্দকার, উজ্জ্বল খন্দকার, আল আমিন খন্দকার এবং জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ও সাইফুল আলম ভুঁইয়া দুই গ্রুপের লোকজনই কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী গ্রুপের নেতা বলে জানান স্থানীয়রা। এ দিকে সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া জানান, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকার লোকজন নিয়ে একটি দোকানে তালা দিয়েছিল। পরে আমাদের লোকজন বাধা দিলে দোকানের তালা খুলে দেন। কিন্তু দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করতে তাদেরকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকার ও তার লোকজন আমাদের লোকজনের উপর গুলি চালায়। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে মিটিংয়ে থাকার কথা বলে ফোন রেখে দেন। তবে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল খন্দকার জানান, দোকানে তালা দেয়ার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে তার মোবাইলে বাগবিতণ্ডার পরই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এদিকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনুপ কুমার সরকার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ থাকার কথাও জানান তিনি। কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্য বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র: Channel 24

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।