প্রচ্ছদ সারাবিশ্ব বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী, চলতি বছর থেকেই পৃথিবী ধ্বংস শুরু

বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী, চলতি বছর থেকেই পৃথিবী ধ্বংস শুরু

ভবিষ্যৎ বক্তা হিসাবে বাবা ভাঙ্গার খ্যাতি এখন জগতজুড়ে। নস্ট্রাডামাসের পর বাবা ভাঙ্গাই এখন বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় জ্যোতিষী, যিনি দেখতে পান মানব সভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে আসতে পারে এমন সব বিপদের কথা। বুলগেরিয়ান এই জ্যোতিষী মারা যাওয়ার পরও তার করা কথা এখনও ফলছে।

মিলে গিয়েছে তার করা একের পর এক ভবিষ্যদ্বাণী। তার মুখের কথা একবারে অব্যর্থ। ফরাসি দার্শনিক তথা ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নস্ট্রাডামাসের সঙ্গে উচ্চারিত হয় বুলগেরিয়ার ‘বাবা ভাঙ্গা’র নাম। একের পর এক শোরগোল ফেলা সব ভবিষ্যদ্বাণী করে তিনি জনপ্রিয়তার শিখরে।

বাবা ভাঙ্গা জানিয়েছিলেন, আগামী ৬৩ বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০৮৮ সালের মধ্যে একটি অজানা ভাইরাস গ্রাস করবে পৃথিবীকে। এই ভাইরাসের জেরে পৃথিবীর মানুষ অল্প সময়ে প্রবীণ হয়ে যাবে। ফলে মানুষের বয়স দ্রত কমে যাবে এবং তারা দ্রুত মৃত্যুর কাছে চলে যাবে।

দ্রুত সবার বয়স বাড়বে। মানুষ দ্রুত প্রবীণ হয়ে যাবে। কেউ এর থেকে রেহাই পাবে না। পাশাপাশি বিশ্বে প্রচুর নতুন ভাইরাস তৈরি হবে যা সকলের বয়সকে বাড়িয়ে দেবে। যেভাবে বিশ্বের পরিবেশ পরিবর্তন হচ্ছে তাতে মানুষ তাড়াতাড়ি প্রবীণ হয়ে যাবে।

বাবা ভাঙ্গার কথা অনুসারে পৃথিবীর পরিবেশে দ্রুত বদল ঘটবে। ফলে সেখান থেকে নতুন ভাইরাস তৈরি হবে। এই ভাইরাসের হাত থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। ভাইরাসকে ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হবে বলেও সতর্কবার্তা দেন বাবা ভাঙ্গা। ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের ভবিষ্যদ্বাণী থেকে শুরু করে করোনা মহামারী, সবই নাকি জানিয়ে গিয়েছেন তিনি।

বাবা ভাঙ্গা ১৯১১ সালে জন্ম নেন। ছেলেবেলায় এক দুর্ঘটনার জেরে নিজের অন্ধ হয়ে যান তিনি। কথিত রয়েছে এরপর থেকেই তিনি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন। বুলগেরিয়ার এই জ্যোতিষীর নাম তখন থেকেই ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তার করা বেশ কয়েকটি কথা ইতিমধ্যে ফলে গিয়েছে বলে মানুষ তাকে মেনে চলে।

বাবা ভাঙ্গার মতে, ২০২৫ সালে ইউরোপ বেশ কয়েকটি অংশে ভাগ হয়ে যাবে। শুরুতেই হবে বিশাল এক ভূমিকম্প। হাইতি, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড এবং তুরস্কের ভূমিকম্প এর সাক্ষ্য। ২০২৫ সাল থেকেই যে পৃথিবীর শেষের সূচনা হতে চলেছে তারও আগাম ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছেন তিনি।

তবে ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত মানব সভ্যতা সম্পূর্ণ বিলুপ্তির মুখোমুখি হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০২৮ সালে একটি নতুন শক্তি জন্ম নেবে। মানুষ মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার চেষ্টা করবে। ২০৩৩ সালে পরিবেশে বড় বদল হবে। সমুদ্রে জলের স্তর বাড়বে। বেশ কয়েকটি দেশ জলের তলায় চলে যাবে।

২০৪৩ সালে ইউরোপে মুসলিম শক্তির বিকাশ ঘটবে। ২০৪৬ সালে মানুষের দেহ কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হবে। ২০৬৬ সালে আমেরিকার হাতে এমন ক্ষমতা আসবে যে পরিবেশকে ধ্বংস করা যাবে।

‘বুলগেরিয়ার নস্ট্রাডামাস’ নামে পরিচিত এই রহস্য মোড়া ব্যক্তিত্ব আসল একজন নারী। বাবা ভাঙ্গা নামে সারা বিশ্বে খ্যাতি ও প্রচার পেলেও এটি তার আসল নাম নয়। তার আসল নাম হলো হলো ভ্যানগেলিয়া প্যানদেভা দিমিত্রোভা। ‘বাবা’ শব্দটি একটি বুলগেরিয়ান শব্দ যার অর্থ ‘বয়স্ক নারী’ বা ‘দাদি’। বয়স্ক নারীদেরকে ভালোবাসা, স্নেহ ও সম্মানের সঙ্গে সম্বোধন করতে ব্যবহার করা হয় শব্দটি।

১৯১১ সালের ৩১ জানুয়ারি উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্ট্রোমিকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বিয়ের পর অবশ্য নাম পরিবর্তন করে তার পরিচয় হয় ভ্যানগেলিয়া গুস্টেরোভা নামে। জীবনের অর্ধেকটাই তার কেটেছে বুলগেরিয়ার কুজহু পার্বত্য অঞ্চলের রুপিটিতে।

খুব ছোটবেলায় তার মা মারা যান। তার পূর্ণবয়সের যে ছবি দেখতে পাওয়া যায় তাতে দেখা গিয়েছে, ভ্যানগেলিয়ার চোখের মণির জায়গা ফাঁকা। অথচ ছোটবেলায় সেই জায়গায় ছিল সুন্দর দু’টি নীল চোখ। আর পাঁচটি ফুটফুটে শিশুর মতো ছিলেন তিনি।

সেই সময় একটি দুর্যোগের কবলে পড়েন। ঝড়ের মধ্যে পড়ে দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন। পরে, তাঁকে উদ্ধার করা হলে দেখা যায় বালি ও কাদা ঢুকে চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা হয়নি তাঁর। ফলে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যান বাবা।

১৯২৫ সালে জেমুন শহরে ভাঙ্গাকে একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয় যেখানে তিনি ব্রেল পদ্ধতিতে লেখাপড়া শেখেন। সেখানেই তিনি পিয়ানো বাজানো, সেলাই, রান্না করা শেখেন। ১৯৩৯ সালে তিনি ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দিলেও তিনি হঠাৎই সুস্থ হয়ে উঠেন।

তার অলৌকিক ক্ষমতা জনপ্রিয় হতে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। সেই সময় অনেকেই বাবা ভাঙ্গার কাছে এসে জানতে চাইতেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাদের পরিবারের সদস্যেরা বেঁচে আছেন কিনা। এই সময়ই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় দিমিতার গোসতারোভ নামে একজন সৈনিকের।

তিনিও ভবিষ্যৎ জানতে বাবার কাছে আসতেন। ১৯৪২ সালে দিমিতারের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের পর সংসার পাতেন পেতরিচে। তখন থেকে খ্যাতি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এই ভবিষ্যৎ-বক্তার। ১৯৪২ সালের ৮ এপ্রিল বুলগেরীয় শাসক তৃতীয় বোরিস এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য। শোনা যায়, বুলগেরিয়ার কমিউনিস্ট পার্টির বেশ কয়েক জন নেতার উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছিলেন বাবা ভাঙ্গা।

১৯৯৬ সালের ১১ অগস্ট স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। নিজের ভবিষ্যদ্বাণীও নিজেই করেছিলেন এই রহস্যময়ী নারী। প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর দিনক্ষণ মিলিয়ে দিয়েছিলেন। মিলিয়ে দিয়েছিলেন ৯/১১-এ নিউ ইয়র্কের সন্ত্রাসবাদী হামলাও। এমনকি, চেরনোবিল বিপর্যয় এবং ব্রেক্সিটের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও যা বলেছিলেন, অলৌকিক ভাবে মিলে গিয়েছে সব।

তিনি মারা যাওয়ার আগে বলে গিয়েছেন, ২০২৫ সালে ইউরোপে একটি বড় সংঘাত দেখা দেবে। এর ফলে ইউরোপের জনসংখ্যা কমে যাবে। ২০৪৩ সালের মধ্যে মুসলিম শাসন ইউরোপে আধিপত্য বিস্তার করবে। ২০৭৬ সালের মধ্যে বিশ্ব জুড়ে কমিউনিস্ট শাসন পুনরায় কায়েম হবে বলে জানিয়ে গিয়েছেন তিনি।

সূত্র: একাত্তর টিভি

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।