প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক বাতিল হতে পারে ৯টা থেকে ৫টার অফিস সময়

বাতিল হতে পারে ৯টা থেকে ৫টার অফিস সময়

সাধারণভাবে বলতে গেলে, ১৮০০ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে কর্মদিবসের দৈর্ঘ্য ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছিল। ১৯২০ সালে এসে সেই সময়সীমা থিতু হয়। আমেরিকা ও ইউরোপের শ্রমিক সংগঠনের ক্রমাগত লড়াইয়ের ফলে কর্মীদের কাজের পরিবেশ ও সময়ের উন্নতি ঘটে।

১৯২৬ সালে হেনরি ফোর্ডের সংস্থা ফোর্ড মোটর দিনে আট ঘণ্টা, পাঁচ দিনের কর্ম সপ্তাহ চালু করে। শিল্প বিপ্লবের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত ফোর্ড ঘোষণা করেছিলেন যে, আট ঘণ্টা কাজ করলে প্রত্যেক শ্রমিককে দিনে ৫ ডলার দেবেন, যা সেই সময় একজন শ্রমিকের গড় পারিশ্রমিকের প্রায় দ্বিগুণ ছিল।

ফোর্ড মানতেন, অল্প সময়ের জন্য কাজ করালে শ্রমিকের কাজ করার গতি বেড়ে যায় ও উৎপাদন বাড়ে। এই নীতি ফলপ্রসূ হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি অন্যান্য সংস্থা ফোর্ডের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে শুরু করে।

এর পর আসরে নামেন ‘কেলগস’ সংস্থার মালিক ডব্লিউ কে কেলগ। ১৯৩০ সালে শ্রমিকদের বেতন কিছুটা কমিয়ে আট ঘণ্টার শিফ্‌টের পরিবর্তে ছয় ঘণ্টা শিফ্‌ট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে এই বাঁধাধরা সময়সীমার বহু পরিবর্তন হয়। তর্ক-বিতর্কের পর আমেরিকায় ‘ফেয়ার লেবার স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্ট’ চালু করা হয়। নিয়ম করা হয় নিয়োগকর্তারা সপ্তাহে ৪৪ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন এমন সমস্ত কর্মচারীদের অতিরিক্ত বেতন দেবেন। দুবছর পর এই আইন সংশোধন করে কর্মসপ্তাহ কমিয়ে ৪০ ঘণ্টা করা হয়।

১৯৪০ সাল থেকে আমেরিকায় সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কর্মসপ্তাহ আইনে পরিণত হয়। সেই থেকেই সারা বিশ্বে চালু হয় খাতা-কলমে আট ঘণ্টা কাজের সময়ের দৈর্ঘ্য।

সম্প্রতি চলতি বছরের পরিসংখ্যান পেশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা। যেখানে গোটা পৃথিবীর দেশগুলির কর্মসময় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কোন দেশে চাকুরিজীবীদের একটানা কতক্ষণ কাজ করতে হয় তার পূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে এই রিপোর্টে।

সেই রিপোর্টে স্পষ্ট ইংল্যান্ড, আমেরিকার কর্মচারীদের তুলনায় এ দেশের প্রত্যেক কর্মচারী নির্দিষ্ট সময়ের অনেক বেশি কাজ করছেন। ভারতে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের একাংশের দাবি, তাদের উপর কাজের চাপ বাড়িয়েই চলেছে সংস্থা। ফলে বাড়ছে কাজ করার সময়।

সাপ্তাহিক হিসাব ধরলে ভারতের চাকুরিজীবীরা মোট ৪৬.৭ ঘণ্টা কাজ করে থাকেন। ছয়দিন অফিস হলে রোজ ৭. ৭৮ ঘণ্টা। পাঁচ দিন অফিস হলে ৯.৩ ঘণ্টা।

আট ঘণ্টার কাজের সময়ের বাস্তবে প্রয়োগ হয় না—এমন অভিযোগ করেছেন বহু চাকুরিজীবী।

সূত্র: আনন্দবাজার, চ্যানেল আই

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।