প্রচ্ছদ জাতীয় বাংলাদেশে ড. ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কী?

বাংলাদেশে ড. ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কী?

বাংলাদেশে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ও এর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে সম্প্রতি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা চরমে পৌঁছে যায়। সেনাবাহিনীর সঙ্গে অন্ত:দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ এবং নির্বাচন নিয়ে মতানৈক্য সবমিলিয়ে এ সরকার এক গভীর সংকটে রয়েছে বলে এক বিশ্লেষণে তুলে ধরেছে আল-জাজিরা।

এতে বলা হয়েছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেস্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের যে বৈঠক হয়, তা সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে একটি দরজার আড়ালে হওয়া বৈঠক।

সরকারে থাকা একাধিক সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গত ২০ মে’র ওই বৈঠকটি এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন ঢাকায় ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে যা ‘ঠাণ্ডা লড়াই’ হিসেবে চিত্রিত হচ্ছে। সেই সামরিক-বেসামরিক টানাপোড়েন এখন ইউনূসের প্রশাসনের ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলেছে— ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেওয়ার ৯ মাস পর।

২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তার ১৫ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে জনরোষ ফুঁসে ওঠে ওই সময়, যাকে মূলত গুম-খুনের শাসন বলা হয়।

এদিকে ‍সম্প্রতি, ড. ইউনূস পদত্যাগ করছেন—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে শনিবার (২৪ মে) এক মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদুদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা (ড. ইউনূস) আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন—তিনি পদত্যাগ করছেন না। অন্যরাও রয়েছেন। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব’।

সামরিক-বেসামরিক টানাপোড়েন কেন বাড়ছে?

২০২৪ সালের জুলাইয়ে গণবিক্ষোভের মুখে পুলিশের কার্যক্রম ভেঙে পড়ার পর থেকেই মূলত সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। পুলিশ আগস্টে পুনরায় কাজ শুরু করলেও অস্থিরতার কারণে সেনা মোতায়েন অব্যাহত রাখা হয়েছে।

তবে গত ২১ মে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক বক্তৃতায় সরাসরি বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ সেনাবাহিনীর দীর্ঘমেয়াদি সিভিল দায়িত্ব জাতীয় প্রতিরক্ষা ঝুঁকির মুখে ফেলছে।

ঢাকা সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। এটি নির্বাচিত সরকার দিয়েই সম্ভব, অর্পিত সিদ্ধান্তদাতা দিয়ে নয়’।

তার এই বক্তৃতা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে দেশজুড়ে ও জাতিসংঘ মিশনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইউনিফর্ম পরে যোগ দেন। এ সময় তার ওই বক্তব্য ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ বার্তা।