প্রচ্ছদ জাতীয় বাংলাদেশের RAB এখন কিভাবে চলছে তার একটি নির্মম কাহিনী আজ আপনাদেরকে শোনাব

বাংলাদেশের RAB এখন কিভাবে চলছে তার একটি নির্মম কাহিনী আজ আপনাদেরকে শোনাব

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন নতুন ঘটনার যেন শেষ নেই। দেশের আইন- কানুন, প্রশাসন ও দূর্নীতি, রাজনীতি ও অর্থনীতির বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়ে থাকে প্রতিনিয়ত। এসব বিষয় নিয়ে সর্বদা শিরোনামে থাকেন ছাত্রলীগ, বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্যরা। সম্প্রতি দেশের আলোচিত বিষয় প্রশাসন ও তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন গোলাম মওলা রনি। যা মূহুর্তের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গোলাম মওলা রনির দেওয়া ফেসবুক পোস্টটি মিডিয়ার পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো..

বাংলাদেশের RAB এখন কিভাবে চলছে তার একটি নির্মম কাহিনী আজ আপনাদেরকে শোনাব ! কিন্তু তার আগে ছবির ভদ্রলোকদ্বয়ের পরিচয় দেয়া প্রয়োজন । প্রথম জন জবাব খুরশিদ আলম এবং দ্বিতীয় জন জনাব কর্নেল মাহবুব ! আমি যে সময়ের কথা বলছি তখন তারা যথাক্রমে RAB এর মহাপরিচালক এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হিসাবে কর্মরত ছিলেন !

২১শে মে, ২০২৪ সালের সকাল ১১ টার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আমার উপর অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা আক্রমন করে । এটা ছিলো মূলত আমাকে হত্যার একটি পরিকল্পিত চেষ্টা । সন্ত্রাসীরা গাড়ি রোধ করে ব্যাপক ভাংচুর শুরু করে। আমার ড্রাইভার যখন বুঝতে পারেন যে সন্ত্রাসীদের টার্গেট আমাকে গাড়ি থেকে বের করা তখন সে গাড়িতে টান মেরে এলাকা ত্যাগ করে । সন্ত্রাসীরা গাড়ির সামনে পিছনে ব্যাপক ভাংচুর করেও গাড়ি থামাতে ব্যর্থ হয় ।

উল্লেখিত অবস্থায় আমি অফিসে এসে অন্তত ঘণ্টা খানেক নির্বাক এবং কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে বসে থাকি । পরে সিদ্ধান্ত নেই , কাউকে কিছু বলবোনা । এই দেশে কেউ যদি কারো গুলি-বোমা-ক্রসফায়ার বা গুমের টার্গেটে পরিণত হয় তবে নীরবে তওবা করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকাই নিরাপদ । কিন্তু আমি নীরব থাকতে পারলাম না । কিভাবে যেন ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলো এবং সাংবাদিকরা একের পর এক ফোন করতে শুরু করলেন । প্রথমে আমি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম । কিন্তু শেষ অবধি প্রকৃত ঘটনা সাংবাদিকদেরকে জানাতে বাধ্য হলাম ।

আমি বুঝতে পারছিলাম না কি করবো । নিজেকে খুব ছোট এবং অসহায় মনে হতে থাকলো । অতীতের অনেক চাঞ্চল্যকর গুম খুনের ঘটনা নিজের অজান্তে মনের মধ্যে চলে এলো । ভাবলাম – বিষয়টি রাষ্ট্রকে জানানো উচিত । সবার আগে যে প্রতিষ্ঠানটির কথা মনে এলো সেটা হলো RAB । আমি সব সময় এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে উচ্চ ধারনা পোষণ করতাম এবং আমার লেখনী এবং বক্তব্য দ্বারা এই প্রতিষ্ঠানটিকে সর্বদা ইতিবাচক হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ।

আমি যখন এমপি ছিলাম তখন বন্ধু জিয়া RAB এর গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন । পুলিশ কর্তা-সেনা কর্তা এবং বিচারক বন্ধুদের অফিসে আমি কোন দিন না গেলেও জিয়ার অফিসে বেশ কয়েকবার গিয়েছি তার আন্তরিক আমন্ত্রণের কারনে । সেই সুবাদে তখনকার অনেক RAB কর্তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে এবং জিয়ার জন্যই মূলত বাহিনীটি সম্পর্কে আমার ইতিবাচক ধারনা হয় । সেই সূত্রে আমি প্রথমেই ছবির দ্বিতীয় ব্যক্তি কর্নেল মাহবুবকে ফোন করি । তিনি ফোন ধরেননি । নিজের বিপদের কথা জানিয়ে একটি এসএম এস করি । সেটারও কোন উত্তর না পেয়ে ধরে নিলাম যে কর্নেল মাহবুব আমার পরিচিত সাবেক RAB কর্তা তৎকালীন কর্নেল জিয়া যিনি বর্তমানে মেজর জেনারেল পদে আছেন তার মতো নন ।

উল্লেখিত ঘটনার পর আমি মহাপরিচালক সাহেবকে ফোন করি । তিনি আমার কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং থানায় একটি মামলা করে সেই মামলার কপি RAB তিন এর অফিসে পাঠাতে বলেন । আমি তার পরামর্শ মতো কাজ করি এবং সংশ্লিষ্ট RAB তিন এর একজন কর্তার সঙ্গে কথা বলি । তিনি আমাকে জানান যে, RAB এর পক্ষে এই ঘটনা তদন্ত করা এবং অপরাধীদের ধরা কোন বিষয়ই নয় । বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে কথা বলবেন এবং গ্রীন সিগন্যাল পেলে কাজ শুরু করবেন । আমি আবার মহাপরিচালক সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং প্রকৃত ঘটনা খুলে বলি । তিনি বেশ আন্তরিকতা নিয়ে আমাকে আশ্বস্ত করেন যে তিনি RAB তিনে বলে দিবেন । আমি পুলকিত মনে জনাব খুরশিদ আলমকে ধন্যবাদ জানালাম এবং তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করে সেরাতে ঘুমাতে গেলাম ।

উপরোক্ত ঘটনার জেরে আমি বেশ কয়েকদিন আনন্দে কাটালাম । কিন্তু RAB এর পক্ষ থেকে কোন আজ অবধি কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বিষয়টি আপনাদেরকে জানালাম ।

আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন । যদি মরে যাই তবে আমাকে মাফ করে দিবেন । আল্লাহ হাফেজ !

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।