
ফুটবলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বল’। অনুশীলন থেকে নানান স্তরের টুর্নামেন্ট পরিচালনায় প্রতি বছর বলের পেছনে কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। এবার এই ব্যয় কমাতে জাপানি কোম্পানি মলটেন-এর সঙ্গে তিন বছরের একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাফুফে।
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে বাফুফে ভবনের তৃতীয় তলার কনফারেন্স রুমে মলটেন কর্পোরেশনের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী তিন বছর বিনামূল্যে এবং ছাড়ে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ফুটবল পাবে বাফুফে। ফুটবলগুলো জাতীয় দল, বয়সভিত্তিক দল, ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বাফুফে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফের সহ-সভাপতি ও মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ফাহাদ করিম।
তিনি বলেন, ‘মলটেন প্রতি বছর বাফুফেকে ২ হাজার বল বিনামূল্যে দেবে এবং আরও ২ হাজার বল বাজারমূল্যের চেয়ে সাশ্রয়ী দামে সরবরাহ করবে। এতে প্রতি বছর আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে, যা তিন বছরে দেড় কোটি টাকা ছাড়াবে।’
এতদিন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) আর্থিক সহায়তা খাত থেকে বলের জন্য অর্থ ব্যয় করত বাফুফে। এখন সেই সঞ্চিত অর্থ অন্যান্য ক্রীড়া সামগ্রীতে ব্যয় করার পরিকল্পনা ফেডারেশনের।
এ প্রসঙ্গে ফাহাদ করিম বলেন, ‘তাবিথ আউয়াল দায়িত্ব নেওয়ার পর ফিফা-এএফসির অর্থ ব্যয়ের পদ্ধতি পর্যালোচনা করে দেখেছেন কীভাবে, তা আরও কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হতে পারে।’
জানা গেছে, ২০২৪ সালে বাফুফে মলটেনের ৩ হাজারের বেশি বল কিনেছিল। টেকনিক্যাল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বছরে ৪ হাজার বল প্রয়োজন হয়। অতিরিক্ত প্রয়োজন হলে বাফুফে অন্য কোম্পানির কাছ থেকেও বল কিনতে পারবে; তাতে মলটেনের কোনো বাধা নেই।
এদিকে আগামী ১০ জুন ঘরের মাঠে অভিষেক হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরীর। এই ম্যাচে ইতালিপ্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম ও কানাডাপ্রবাসী সমিত সোমও লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে যাচ্ছেন। এর আগেই অফিসিয়াল ফুটবল পার্টনার পেয়েছে বাফুফে; দেশের ইতিহাসে যা এবারই প্রথম। অন্যান্য স্পন্সরের মতো তাদেরও বিভিন্ন বোর্ড ও কার্যক্রমে যুক্ত করা হবে।
বিভিন্ন নামকরা বল প্রস্তুতকারক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করলেও মলটেনকে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় ফাহাদ করিম বলেন, ‘৪-৫টি কোম্পানি আমাদের অফার দিয়েছিল, কেউ কেউ ৫০০ থেকে ১ হাজার বল বিনামূল্যে দিতে রাজি ছিল। মলটেন শুরুতে ১,৫০০; পরে ২,০০০ বল দিতে রাজি হয়। এছাড়া মলটেন বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড এবং বাংলাদেশে অনেক প্রতিযোগিতায় এই বলই ব্যবহৃত হয়।’
চুক্তি অনুযায়ী, ক্লাব ও জেলা পর্যায়ে বল বিতরণেরও পরিকল্পনা রয়েছে বাফুফের, যাতে কেবল মৌসুম শেষের আগে নয়, সারাবছর পর্যাপ্ত পরিমাণে বল ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।
চুক্তিতে মলটেন করপোরেশনের পক্ষে সই করেন এশিয়ান গ্রুপ লিডার তাকাশি ওজাকি। তিনি বলেন, ‘ফুটবল একটি আবেগ। মলটেনের মাধ্যমে সবাই যেন এই আবেগের অংশ হতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
উল্লেখ্য, বাফুফের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ফাহাদ করিম। এ সময় সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ও ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপিও উপস্থিত ছিলেন।