প্রচ্ছদ সারাদেশ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিশুসন্তানকে নিয়ে ট্রেনে ঝাঁপ দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শিশুসন্তানকে নিয়ে ট্রেনে ঝাঁপ দিলেন প্রবাসীর স্ত্রী

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তালাক দেওয়ার পর স্বামীর কাছ থেকে কোনো সুরাহা পাননি তাহমিনা আক্তার (২৪) নামে এক নারী। পরে দেড় বছর বয়সী শিশুসন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া চট্টগ্রামগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ঐ নারী।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ কাজীগাঁও এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাহমিনা হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের দেওয়াঞ্জি বাগির রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তার মুনতাহা (৫) নামে কন্যাসন্তানও রয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালে একই উপজেলার সন্না গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে প্রবাসী মো. মাসুদুজ্জামান হাওলাদারের সঙ্গে সামাজিকভাবে তাহমিনার বিয়ে হয়। আত্মহত্যার ঘটনার পর হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এরপর বিকেলে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানা পুলিশ।

চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওসি মাসুদু রহমান বলেন, মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাহমিনা আজকে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর আগে, তাহমিনা গত ২৮ মার্চ তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর স্বামী দেশে আসলেও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন বলে স্থানীয়দের ধারণা।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তাহমিনা আক্তার বিয়ের পর থেকেই তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। কারণ বিয়ের পরে বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নিয়ে স্বামীকে কুয়েত পাঠান। স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তাহমিনার সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে বাকবিতণ্ডা হয়। তার স্বামী তাকে বাবার বাড়ি থেকে অন্যত্র থাকতে বলেন। যে কারণে তিনি হাজীগঞ্জ মকিবাদ চৌধুরীপাড়ায় দুই সন্তানকে নিয়ে বাসাবাড়া করে থাকতেন। সেখানে থাকা অবস্থায় স্বামী তাকে নানা অপবাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতেন এবং তাদের ভরণ-পোষণ দিতেন না। যে কারণে স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় তাকে তালাক দেন।

এদিকে, গত ১৮ এপ্রিল তাহমিনার স্বামী মাসুদুজ্জামান হাওলাদার দেশে আসেন এবং মোবাইল ফোনে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তাকে পুনরায় তার সংসারে যাওয়ার জন্য বলেন। যদি স্বামীর সংসারে না যান তাহলে তাদের স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন মাসুদুজ্জামান।

তাহমিনা আক্তার হাজীগঞ্জ থানায় গত ২৮ মার্চ অভিযোগ দেওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় থানার এসআই আব্দুর রহমানকে।