প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক ফিল্ড মার্শাল হলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান: যে কারণে এই পদ গুরুত্বপূর্ণ

ফিল্ড মার্শাল হলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান: যে কারণে এই পদ গুরুত্বপূর্ণ

ভারতের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে জেনারেল থেকে ফিল্ড মার্মাল পদে পদোন্নতি দিয়েছে দেশটির সরকার। এরপর নতুন করে আবারও আলোচনায় এসেছেন তিনি। বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো তার শুরুর দিকের জীবনের বিভিন্ন গল্প সামনে তুলে আনছে।

সংবাদমাধ্যম মানি কন্ট্রোল গত ২ মে এক প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানের আগের যেসব সেনাপ্রধান ছিলেন তাদের প্রায় সবাই সামরিক বা উচ্চপদস্থ অথবা আমলা পরিবার থেকে এসেছেন। কিন্তু সদ্যই ফিল্ড মার্শাল হওয়া আসিম মুনির এসেছেন সাধারণ পরিবার থেকে।

তার বাবা ছিলেন একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল। ১৯৪৭ সালে তিনি ভারতের পাঞ্জাবের জালান্দার থেকে পাকিস্তানে চলে যান। স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি মসজিদের ইমামও ছিলেন।

ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির রাওয়ালপিন্ডির মারকাজ মাদরাসা দারুল তাওহীদে নিজের শিক্ষাজীবন শুরু করেন। যার অর্থ তিনি ধর্মীয় আবহে বেড়ে উঠেছিলেন।

মাদরাসায় পড়াশোনা সত্ত্বেও তিনি অ্যাবাটোবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে নিজের গ্র্যাজুয়েশেন সম্পন্ন করেন। এরপর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ২৩নং ব্যাটালিয়নে প্রথম কমিশন পান তিনি।

এরপর তাকে সৌদি আরবে পাঠায় পাক সেনাবাহিনী। সেখানেই তিনি সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্ত করে কোরআনে হাফেজ হন। তিনি তার বক্তব্যে প্রায় সময়ই কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে কথা বলেন। ফিল্ড মার্শাল মুনির উর্দু, ইংরেজির পাশাপাশি আরবিতেও কথা বলতে পারেন।

তিনিই পাকিস্তানের ইতিহাসে একমাত্র সেনাপ্রধান যিনি মাদরাসার ছাত্র থেকে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন।

আসিম মুনির বিতর্কিতও

আসিম মুনির তার সামরিক ক্যারিয়ার শুরু করেন জেনারেল জিয়ার আমলে ১৯৮৬ সালে। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৮ সালে দেশটির প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মাত্র ৮ মাসের মাথায় এ পদ হারান তিনি। তাদের দ্বন্দ্ব এতটাই বেশি ছিল যে ইমরান খান প্রকাশ্যে মুনিরের সমালোচনা শুরু করেন।

আইএসআই প্রধানের পদ থেকে অপসারণের পর তাকে ট্রিপল এক্স কর্পসের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে কোয়ার্টার মাস্টার হন তিনি। তবে ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালে তাকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় শেহবাজ শরিফ সরকার। এরপর তিনি দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষে পরিণত হন।

২০২৪ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ইমরান খানের দলকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া ইমরানের দলের নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় ও নির্যাতন চালানো হয়। এসবের পিছনে আসিম মুনিরের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ইমরানকে কারারুদ্ধ করে রাখা এবং তার সমর্থকদের ওপর নির্যাতনের কারণে সেনাবাহিনী ও মুনির ইমেজ সংকটে পড়ে। তবে ভারতের বিরুদ্ধ গত ১৫ দিনে লড়াই পাকিস্তানের হয়েয়ে সেটির পর সেনাবাহিনী ও মুনির উভয়ই আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

সূত্র: মানি কন্ট্রোল