প্রচ্ছদ হেড লাইন প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তিযোদ্ধা কন্যার আবেদন

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তিযোদ্ধা কন্যার আবেদন

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক নুরতাজ তাজিয়া। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত ও সফল কন্যা। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় তিনি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়ায় বিএনপির আমলে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পোহাতে হয়েছে তাদের। বর্তমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে তিনি নিজে খুবই শঙ্কিত। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ভোরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি বিশেষ আবেদন জানিয়ে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেছেন।

নুরতাজ তাজিয়া ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন: দমাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি একজন মা, একজন শিক্ষক, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং একজন মুজিব আদর্শের সৈনিক। আপনার কাছে বিনয়ের সঙ্গে এক সাধারণের একান্ত আর্জি। প্রিয় নেত্রী, আপনি বাঙালির সূর্যকন্যা। দেশের এই জটিল পরিস্থিতিকে আপনি এবং আপনিই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন বলে আমি ও আমরা বিশ্বাস করি। কারণ আপনি মুজিব কন্যা। আপনি যদি অত্যন্ত দ্রুত পদক্ষেপ না নেন হয়তো অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমার মতো কোটি বাঙালি হবে বাকরুদ্ধ । আমি গর্বিত আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার পূর্ববর্তী চাকরি সাধারণ কোটায় হলেও আমি বর্তমান যে চাকরি করছি সেটা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায়। বাবার জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখে যেতে পারেননি। বাবা এতো আকাঙ্ক্ষিত জিনিসটা দেখে যেতে পারেননি। কিন্তু আমি গর্বিত একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় আমার চাকরি হওয়ায়।

চাকরি হওয়ার পর যে ভয়ঙ্কর ট্রলের মুখে পড়েছিলাম সেটাও চরম ছিল চরম অপমানের। এতো অপমানের পরও আমি গর্বিত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। আমি গর্বিত আপনাকে নিয়ে। আমি গর্বিত আমার বাবাসহ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে। আমি গর্বিত আমার দেশের আপামর নিরীহ সরল জনসাধারণ নিয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের দেশের কর্ণধার। দেশের মাথা বিভিন্নভাবে অনেকে নোয়ানোর চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষ ও বিশাল ছাত্রসমাজ আপনার মহানুভবতা, সন্তান বাৎসল্য, উন্নত মানসিকতা, বুদ্ধিদৃপ্ততা, বিচক্ষণতার ওপর প্রবলভাবে আস্থা রেখেছে দীর্ঘ সময় ধরে। প্রিয় মন্ত্রী, আপনি অনেক জ্ঞানী, উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী। আপনার পানে গভীর প্রতীক্ষায় অপেক্ষমান দেশের মূল্যবান ছাত্রসমাজ, সঙ্গে দেশের আপামর বাঙালি। আপনি দয়া করে সকলকে জানিয়ে দিন আর যদি একটা গুলিও না চলে আমার ছেলেদের ওপর। তাহলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

প্রিয় দেশমাতা, আপনার সঙ্গে কথা বলতে আমাদের ছেলেরা উদগ্রীব হয়ে আছে। ৭ তারিখ অনেক লম্বা সময়। টগবগে রক্ত। কিছু খারাপ না ঘটার জন্য দয়া করে সময়কে এগিয়ে আনুন সামনে। সময় যত দীর্ঘ হবে বিপদের শঙ্কাও ততো বেশি হবে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা যুদ্ধ করেছিলেন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। আমি হাতজোর আপনার উদার চিত্তের কাছে ভিক্ষা চাইছি। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের ছেলেদেরকে সামনে নিয়ে অনেকেই ফাইদা আদায়ের চেষ্টা করছে। তাদেরকে আপনি সুযোগ নেওয়ার সুযোগটা দয়া করে দিয়েন না। আপনার যদি মনে হয় আমি অন্যায় বলছি আমার চাকরিটাও নিয়ে নেন। কিন্তু আপনি আমার সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়ে দেখিয়ে দেন আপনি মুজিবকন্য, আপনিই সূর্যকন্যা। সেই মানুষগুলো আমাদের প্রিয় সন্তানরা অনিশ্চয়তার অমানিশায় আজ নিমজ্জিত। একমাত্র আপনিই পারেন আমাদের ছেলেদের বুকে টেনে নিয়ে ওদের কথা শুনুতে। কোটা বিষয় বসুন। ওরা ঠিক ঠান্ডা হয়ে যাবে। কারণ মায়ের আঁচলের চেয়ে বড় আশ্রয়, শীতল ছায়া আর নাই।’

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।