প্রচ্ছদ জাতীয় পে-স্কেল নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার নতুন মন্তব্য, যে কারণে ঝুলে গেল

পে-স্কেল নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার নতুন মন্তব্য, যে কারণে ঝুলে গেল

সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন পে-স্কেল। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও জানিয়েছিলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে কার্যকর করা হবে নতুন পে-স্কেল।

তবে সেই অর্থ উপদেষ্টাই পে-স্কেল কার্যকরের বিষয়ে দিয়েছেন নতুন তথ্য। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) তিনি জানিয়েছেন, আগামী সরকার হয়তো সেটা এসে (পে স্কেল কার্যকর) করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘একটা পে কমিশনের ব্যাপার আছে। সেটা আমরা এখন কিছু বলতে পারি না। ওটা দেখা যাক কতদূর যায়। আগামী সরকার হয়তো সেটা এসে করতে পারে। আমরা যেহেতু ইনিশিয়েট করে ফেলেছি।’

গত ৩১ অক্টোবর শেষ হয় পে কমিশনের মতামত নেওয়ার কাজ। দেশের বিভিন্ন নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে নির্দিষ্ট সময়েই পে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পে কমিশনের সভাপতি ও সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান আশাবাদ প্রকাশ করে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা সুপারিশ জমা দিতে পারব।

সে অনুযায়ী নতুন পে স্কেল বাস্তবায়নের কথা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারেরই। তা এখন ঝুলে যাওয়ায় সালেহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকে।

তারা বলছেন, বর্তমান সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। ১৫ ডিসেম্বরের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন কর্মচারীরা। এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পে স্কেল কার্যকরের দাবিতে পদক্ষেপ নেবেন তারা।

এদিকে, সরকারের আর্থিক সক্ষমতা না থাকার কারণেই অন্তর্বর্তী সরকার নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, সার্বিকভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি নতুন বেতন স্কেল চাওয়া যৌক্তিক। চাকরিজীবীরা এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটা জোর দাবি ছিল, আশা ছিল তারা সব ধরনের সমস্যা দূর করে অর্থনীতিকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে। কিন্তু এই সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তার উজ্জ্বল প্রমাণ, এই পে স্কেল বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত পরবর্তী সরকারের দিকে ঠেলে দেওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, এই সরকারের বিভিন্ন ব্যয় এবং ঋণের সুদ যে পরিমাণে পরিশোধ করতে হয়, সে তুলনায় আয় করে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। এই অবস্থায় অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। এই অবস্থায় ৮০-১০০ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। পরবর্তীতে যে সরকার আসবে তাদের পক্ষেও অর্থনৈতিক কাঠামো ঠিক করে এমন বেতন বাড়ানো কঠিন হবে।