
হেড লাইন: দুই বছর ধরে অশান্তি কবলিত ভারতের মণিপুর রাজ্যে অবশেষে জারি হলো রাষ্ট্রপতি শাসন। কিছুদিন আগেই সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এন বীরেন সিং। এরপর নতুন কোনো মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। এই অচলাবস্থার মাঝেই বৃহস্পতিবার মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন বীরেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন তিনি। গত রবিবার ইম্ফলে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন বীরেন। এরপর মণিপুরে সরকার পরিচালনার জন্য নতুন কোনো মুখকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিতে পারেনি বিজেপি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বয়ানে লেখা রয়েছে, ‘আমি মণিপুরের রাজ্যপালের থেকে প্রতিবেদন পেয়েছি। ওই প্রতিবেদন দেখে এবং অন্য তথ্যগুলোর ভিত্তিতে আমার মনে হয়েছে, সংবিধান অনুসারে সেখানে সরকার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বীরেনের পদত্যাগের পর মণিপুরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি। উত্তর-পূর্বে বিজেপির দায়িত্বে থাকা সম্বিত পাত্র বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন সে রাজ্যের বিধায়কদের সঙ্গে। গত দুই দিনে রাজ্যপাল ভল্লার সঙ্গে দুই দফায় বৈঠকও সেরেছেন সম্বিত। গত মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ সারদা দেবীকে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন সম্বিত। বুধবার আবার দেখা করতে যান রাজ্যপালের সঙ্গে।
তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব। গণমাধ্যমটির তথ্য অনুসারে, দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তপ্ত রয়েছে মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই ও কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে রাজ্যের পরিস্থিতি। মাঝে কিছুদিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েকজন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।
পরিস্থিতি সামলাতে মণিপুরের বেশ কিছু জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলেছে, মণিপুরে এ পর্যন্ত কয়েক শ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে আরো অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর ভুমিকা নিয়ে অতীতে বারবারই প্রশ্ন উঠেছে। মণিপুরের উদ্ভূত অশান্তির কারণে গত বছরের শেষ দিনে মণিপুরবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন বীরেন। সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরবে।
সূত্র: Kaler Kantho
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |