প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক পাকিস্তানে ভাঙনের মুখে শেহবাজ শরিফ সরকার?

পাকিস্তানে ভাঙনের মুখে শেহবাজ শরিফ সরকার?

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে পদচ্যুত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে সম্প্রতি বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এসব খবরে দাবি করা হয়, প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করে সেই পদে বসতে যাচ্ছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। তবে এমনটা ঘটলে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের বর্তমান সরকার যেহেতু একটি জোট সরকার এবং এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় ফলে জারদারিকে পদচ্যুত করা হলে সরকার ভেঙে যেতে পারে।

কারণ, জারদারি পিপিপির কোটা থেকে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন এবং দলটি সরকারে গুরুত্বপূর্ণ শরিক। ফলে জারদারিকে সরালে পিপিপি জোট থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, যা সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

এদিকে ইসলামাবাদ এবং পিপিপির পক্ষ থেকেও প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করার বিষয়ে খবরগুলোকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পিপিপি সেক্রেটারি জেনারেল নৈয়্যার হুসেন বুখারি মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির পদচ্যুতি নিয়ে ছড়ানো গুজবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, পিপিপির সমর্থন ছাড়া সরকার পরিচালনা সম্ভব নয়।

বুখারি বলেন, ‘পিপিপির সহযোগিতা ছাড়া সরকার চলতে পারে না। প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে ছড়ানো গুজবের কোনো ভিত্তি নেই।’

সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, এই গুজবের সূত্রপাত হয় যখন সুপ্রিম কোর্টের সংবিধান বেঞ্চের রায়ের পর নির্বাচন কমিশন সংরক্ষিত আসন পুনর্বিন্যাস করে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কে জাতীয় পরিষদে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়। ফলে সরকারের আসন সংখ্যা ২১৮ থেকে বেড়ে ২৩৫-এ দাঁড়ায় এবং দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হয়।

এই প্রসঙ্গে বুখারি বলেন, ‘যারা প্রেসিডেন্ট জারদারিকে সরানো নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন, তারা সংবিধান ও আইন সম্পর্কে অজ্ঞ।’ তিনি আরও স্পষ্ট করেন, পিপিপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছে না। বুখারির বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছেন পিএমএল-এন-এর সিনেটর ইরফান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, জারদারিকে সরানোর কোনো প্রস্তাব কোনো পর্যায়ে বিবেচনায় নেই। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে জারদারি তার সাংবিধানিক দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করছেন। মিডিয়ার একাংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালাচ্ছে।

সিদ্দিকী বলেন, একই জোটে থাকলেই সব বিষয়ে একমত হতে হবে—এমন নয়। মতভিন্নতা থাকতেই পারে, কিন্তু জোট অটুট রয়েছে।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভিও প্রেসিডেন্ট জারদারির অপসারণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজবকে ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিয়ে তা নাকচ করে দেন।

আশুরার প্রাক্কালে সিন্ধুর রোহরি শহরে এক সফরে তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনীতিক, সরকার ও সামরিক বাহিনী একমতে রয়েছে—এটাই কিছু মহলের অস্বস্তির কারণ। তাই তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর প্রচার চালাচ্ছে।

সূত্র : জিও নিউজ