
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। জীবনের সেই সবচেয়ে বড় স্বপ্নটাই শেষ পর্যন্ত প্রাণ কেড়ে নিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে গুরুতর আহত হন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সাগর। পরে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সাগরের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারে এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গ্রামের বাড়ি কৃষ্ণচন্দ্রপুরে।
সাগরের মামা শওকত আলী জানান, ছোটবেলা থেকেই সাগরের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। পরিবারের ইচ্ছা ছিল তিনি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হবেন, কিন্তু নিজের স্বপ্নেই ছিলেন অটল। পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত রাজশাহী সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলে লেখাপড়া করেন, এরপর ভর্তি হন পাবনা ক্যাডেট কলেজে এবং সেখান থেকেই উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন।
শওকত আলী আরও জানান, প্রায় এক বছর আগে সাগর সর্বশেষ গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। এরপর আর আসা হয়নি। কয়েক মাস আগে তার বিয়ে হয়। তার স্ত্রী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। তার শ্বশুরবাড়ি গাজীপুর। তৌকিরের শ্বশুর জয়দেবপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক আবুল হোসেন।
আরও পড়ুনঃ হাঠাৎ করে সোহেল তাজের ফেসবুক স্ট্যাটাস
কোথায় দাফন করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান শওকত আলী। পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
আরেক মামা সেলিম জানান, প্রথমে এক সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে তারা দুর্ঘটনার খবর পান। পরে তিনি ও ঢাকায় থাকা সাগরের দুই চাচা সিএমএইচ হাসপাতালে ছুটে যান। বর্তমানে তারা মরদেহ গ্রহণের অপেক্ষায় আছেন।
সাগরের পরিবার বর্তমানে রাজশাহীতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করে। তার বাবা তোহরুল ইসলাম আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং মা সালেহা বেগম একজন গৃহিণী। ছেলের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা, ৪ নদীবন্দরে সতর্কতা
উল্লেখ্য, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৭০ জনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দগ্ধদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী।