
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তিন দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল ৮টা থেকে ১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সহিংস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস ও বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদ উভয়পক্ষই যুগপৎ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলার অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে গলাচিপা থানা কর্তৃপক্ষ অবহিত করেছে ইউএনওকে। তাই গলাচিপা পৌরসভা ও সংলগ্ন এলাকায় ১৩ জুন সকাল ৮টা থেকে ১৫ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। এই সময়ের মধ্যে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জামায়েত, মিছিল, সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ কিংবা দেশীয় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আদেশ লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
ইউএনও মাহমুদুল হাসান বলেন, সাধারণ মানুষের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
গত বুধবার রাতে চরবিশ্বাস ও চরকাজল ইউনিয়নে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভায় নুরুল হক নুরের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বক্তব্যে বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলদারির অভিযোগ তোলায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে গলাচিপা পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। মিছিল শেষে পৌরমঞ্চ চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুরুল হক নুরের বক্তব্যকে মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেতারা।
একই দিন রাত ১০টার দিকে পাতাবুনিয়া বটতলা বাজার এলাকায় নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ তোলে গণঅধিকার পরিষদ। বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রড ও রামদা নিয়ে নুরের গাড়িবহরে হামলার চেষ্টা করেন বলে দাবি করেন তারা। তাদের কর্মীদের মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নুরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।