জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির নিষিদ্ধঘোষিত হওয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন তাদের রাজনৈতিক কৌশল কী হবে তা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। তবে জামায়াতের রাজনৈতিক কৌশল যা-ই হোক না কেন, আপাতত দলটি রাজপথে প্রকাশ্যে কোনো ধরনের কর্মসূচি দেবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জামায়াতের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন, এমন একজন ব্যক্তি জানান, রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও দলটির সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল করা সহজ হবে না। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলছে, যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকায় জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর থেকে দলটি প্রকাশ্য রাজনীতিতে নেই।
তবে তাদের নেতাকর্মীরা সামাজিক কর্মসূচিতে যুক্ত আছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলটির নেতাকর্মীদের সামাজিক কার্যক্রমের পরিধি আরো বাড়তে পারে। জামায়াতের গত কয়েক বছরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক অনুদান, শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বাবলম্বী করাসহ নানা ধরনের সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। মূলত সাধারণ মানুষকে দলটির আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে গোপনে দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে দলটির পরবর্তী কর্মকৌশল নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা ও বিশ্লেষণ চলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এর পরই এ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যাবে।
জামায়াতকে পর্যবেক্ষণ করেন, এমন একজন বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্তত ১০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করবে দলটি, যাতে তাদের রাজনৈতিক ভিত আরো শক্ত করা যায়।
শিগগিরই ক্ষমতার অংশীদার হওয়ার ইচ্ছা থাকার কথা নয় দলটির। বরং জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে তাদের মনোযোগ বেশি থাকবে। নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াত-শিবিরকে পর্যবেক্ষণ করেন, এমন একজন পর্যবেক্ষক জানান, অন্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে জামায়াতের সাংগঠনিক কাঠামো ভিন্ন। এই কাঠামোর মধ্যে থেকে নানা ধরনের কার্যক্রম চালানো সম্ভব।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার দায়ভার জামায়াত-শিবিরের ওপর পড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা যদি এখন মাঠে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে সহিংসতায় জড়ান তবে আবারও রাজনৈতিক ফাঁদে পড়বেন।
এ কারণে দল নিষিদ্ধ হওয়ার পরও তাত্ক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি জামায়াত। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবেলা করা যায় কি না সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে জামায়াত।
বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতের তরুণ নেতাদের একটি অংশ মনে করে, জামায়াত-শিবির নামের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের কালিমা যুক্ত। এর ফলে এক যুগ আগে দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর থেকে তারা ভিন্ন নামে দলীয় কার্যক্রম চালানোর পক্ষে মত দিয়ে আসছিল। দল নিষিদ্ধ হওয়ার পর তরুণ নেতাদের ভিন্ন দলের নামে রাজনীতি করার পরামর্শ আরো জোরালো হতে পারে।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |