
সারাদেশ: ফরিদপুরের নগরকান্দায় সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও মামলা দায়েরের ঘটনায় নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) শামা ওবায়েদ। রোববার (২৫ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি জানান তিনি। এর আগে নগরকান্দায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে কবির ভূঁইয়া (৫০) নামে একজন নিহত হওয়ার পর মামলা হলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শামা ওবায়েদ ছাড়াও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সদস্য পদ স্থগিত করে বিএনপি। গত ২১ আগস্টের ওই সংঘর্ষ ও মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘গেল ২১ আগস্ট ফরিদপুরে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দলের পক্ষ থেকে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি চালিয়ে যাচ্ছি। ২১ আগস্টের সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনা আমি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’ ঘটনায় জড়িতরা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের দাবি করে তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেককেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও নামসহ তথ্য প্রকাশ হয়েছে। সংঘর্ষকারীরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনসহ শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য।
পদ স্থগিত হওয়ার বিষয়ে বিবৃতিতে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রাক্তন মহাসচিব প্রয়াত কেএম ওবায়দুর রহমানের জন্মস্থান এবং আমার শেষ ঠিকানা ফরিদপুরের নগরকান্দায় ২১ আগস্ট ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনায় গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় সাংগঠনিক যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তাকে আমি পূর্ণাঙ্গ সমর্থন জানাই। পরবর্তী সময়ে ২৪ আগস্ট আমাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষ এবং পরবর্তী মামলার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই আমি।’ শামা ওবায়েদ বলেন, ‘গেল ১৮ বছরে গুম, খুন, জেল, জুলুমসহ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির আন্দোলন এখনো চলমান রয়েছে। গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গণহত্যাকে উপেক্ষা করে ছাত্রজনতা ও গণতন্ত্রকামী সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রবল প্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন। যার মধ্যদিয়ে দেশের মানুষ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা লাভ করে। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তাতে দেশি বিদেশি সবার সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত আছে।’ বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যে রক্তের বিনিময়ে যে অর্জন তা এখনো শুকায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমার জন্মস্থান তথা আমার শেষ ঠিকানা ফরিদপুরের নগরকান্দা সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখনো অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোই এখন আমার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিভাজন, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা, মনোনয়ন বিজয় তোড়ন নির্মাণ বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারে শোডাউন কাম্য নয়।’
সবাইকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে-বিদেশে অবস্থানরত আমার শুভানুধ্যায়ীদের নানা ধরনের উৎকণ্ঠা, উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে আমার নিজের অবস্থান তুলে ধরলাম। সবাইকে দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলার অনুরোধ করছি।’পদ স্থগিত হলেও দলের যেকোনো কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকার কথা জানিয়ে শামা ওবায়েদ বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ১/১১ এর অবৈধ সরকারের নির্যাতনের শিকার গুরুতর আহত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সংগ্রামরত সব পেশাজীবী সংগঠনসহ দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সর্বোপরি বিএনপির সঙ্গে আমার সম্পর্ক রক্তের। যেকোনো পরিস্থিতিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে দল নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি সচেষ্ট থাকব।
সূত্র: Channel 24