
টাকা ধার দিয়ে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার ঘটনা সমাজে নতুন নয়। অনেক সময় দেখা যায়, ধার নেওয়ার সময় বিনয়ী থাকলেও টাকা ফেরত দেওয়ার বেলায় অনেকেই গড়িমসি করেন বা যোগাযোগ এড়িয়ে চলেন। বন্ধু, আত্মীয় বা সহকর্মী— যে-ই হোক না কেন, এই সমস্যায় পড়তে পারেন যে কেউ। তবে কিছু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করলে ধারের টাকা ফেরত পাওয়া সহজ হতে পারে।
চলুন জেনে নিই সেই কৌশলগুলো:
ভদ্রভাবে স্মরণ করিয়ে দিন
প্রথমত, বিনয়ের সঙ্গে ঋণগ্রহীতাকে টাকা ফেরতের কথা বলুন। আলাপচারিতার মাধ্যমে জানার চেষ্টা করুন কেন তার টাকা দিতে দেরি হচ্ছে। অনেক সময় বাস্তবিকই কেউ আর্থিক সমস্যায় থাকতে পারেন। এমন ক্ষেত্রে চাপ না দিয়ে ধৈর্য ধরুন। এতে সম্পর্ক এবং টাকা দুটোই রক্ষা করা সম্ভব।
স্পষ্টভাবে টাকার কথা বলুন
যদি বিনয়ের পরও কাজ না হয়, তবে দৃঢ়ভাবে এবং পরিষ্কার ভাষায় টাকার কথা স্মরণ করিয়ে দিন। অনেক সময় মানুষ সহজভাবে বিষয়টি ভুলে যায়। সামনাসামনি বা ফোনে টাকার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলে সৎ মানুষরা দ্রুত টাকা ফেরত দিতে সচেষ্ট হন। অযথা ঝামেলা এড়াতে স্পষ্ট ভাষা ব্যবহার করুন।
নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিন
বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও যদি টাকা ফেরত না পান, তাহলে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ঠিক করে দিন। তাকে জানিয়ে দিন যে, এই তারিখের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে হবে। এতে ঋণগ্রহীতা কিছুটা চাপ অনুভব করবেন এবং টাকা পরিশোধের চেষ্টা করবেন।
কিস্তিতে পরিশোধের প্রস্তাব দিন
যদি বড় অঙ্কের টাকা হয় এবং একবারে ফেরত দেওয়া ঋণগ্রহীতার জন্য কঠিন হয়, তবে মাসিক বা কিস্তিতে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিন। এতে আপনি নিয়মিতভাবে কিছু টাকা ফেরত পাবেন এবং ঋণগ্রহীতাও একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা পরিশোধের চাপ থেকে মুক্ত থাকবেন।
লিখিত চুক্তি করুন
বড় অঙ্কের টাকা বা মূল্যবান কিছু ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি লিখিত চুক্তি করে নিন। চুক্তিতে ঋণের পরিমাণ, পরিশোধের নিয়ম, সময়সীমা এবং প্রয়োজনে জরিমানার শর্তাবলী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। উভয় পক্ষের স্বাক্ষর থাকা উচিত। লিখিত চুক্তি ঋণগ্রহীতাকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং ভবিষ্যতে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হলে আইনি সুরক্ষা প্রদান করে।
এই কৌশলগুলো অনুসরণ করলে ধারের টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং একই সাথে আপনার সম্পর্কগুলোও টেকসই থাকে।