প্রচ্ছদ অপরাধ ও বিচার ধর্ষণ মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ধর্ষণ মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

অপরাধ: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফেনীর আদালতে ধর্ষণ ও ভ্রুণ হত্যা মামলা করেছেন টিকটকার মডেল সিমরান সাদিয়া(২৩)। এই মামলায় মঙ্গলবার রাতে ফেনীর কোয়ার্টার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আশেকুর রহমানের আদালতে মামলা (সিআর-৫৫৮/২৪) দায়ের করেন ওই তরুণী।

ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয় (২৭) সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মনোহর আলী মিয়া বাড়ীর আবদুল্লাহ আল মামুন প্রকাশ বাবুলের ছেলে ।

অন্য আসামিরা হলেন- একই ইউনিয়নের হোসেন আহম্মদের ছেলে সুমন মিয়া (৪৫), রুহুল আমিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন রনি (২২) , আহম্মদ করিমের ছেলে মাহমুদুল করিম তুহিন (২১) ও মো. লিটনের ছেলে মাহাদী (২২)।

ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি খুলনার খালিশপুরে হলেও তিনি বর্তমানে ঢাকার আফতাবনগরে বসবাস করছেন। তিনি একজন জনপ্রিয় টিকটকার ও মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন।

ফোনে যোগাযোগ করা হলে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন ভোক্তভোগী তরুণী। তবে মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান রাসেল বলেন, সংগঠন বহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বিজয়কে শোকজ করা হয়। তিন কর্মদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আমরা অতি দ্রুত বিজয়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে তাকে সোনাগাজী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ধর্ষণ ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে ফেনী আদালতে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত ইকবাল হাসান বিজয় ফেনীর পূবালী সংসদ ও রাজধানীর একটি নাট্য সংগঠনের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করতেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে টিকটকার ওই তরুণী তার এক চাচাতো বোনকে নিয়ে ঢাকা থেকে ফেনীর সোনাগাজীর চর চান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় চর চান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের সঙ্গে তার ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলেও দাবি করেন। পরে তরুণীর কথা অনুসারে চারজন গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তাকে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠান ইউপি চেয়ারম্যান।

এই ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে যান। এ সময় বিজয় ঢাকা থেকে আসা মেহমানদের সঙ্গে কথা শেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজ ঘরে যান। একপর্যায়ে বিজয় বাড়ির পেছন দিক দিয়ে ওই তরুণী ও তার চাচাতো বোনকে নিয়ে পালিয়ে যান।

ওই দিন মধ্যরাতে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় তরুণী ও তার বোনকে ফেনী শহরের মহিপাল এলাকায় জিম্মি করে মারধর করেন। এ সময় তরুণীর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে সিম ভেঙে ফেলেন। পরে ওই তরুণীকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে স্টারলাইন পরিবহনের একটি বাসে করে তাদের ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।