জাতীয়:ছোটখাটো কাজ করে আর ধরা পড়ার ভয়ে লুকিয়ে থেকে এক সময়ে টাকার বিনিময়ে ভারতীয় কিছু পরিচয়পত্রও করিয়ে নেন পিয়াস। বেঙ্গালুরু ও দিল্লিতে কাজ করে কয়েক মাস করে কাটান। কিন্তু পেট ভরে না, সঙ্গে ধরা পড়ার আতঙ্ক।
বাড়ির লোক ফের সেই প্রভাবশালী পুলিশ কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আরও মোটা টাকার বিনিময়ে পিয়াসের বাংলাদেশি পাসপোর্ট করিয়ে তাকে আরবের কোনও দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দেন তিনি। ছেলের প্রাণ বাঁচাতে অনেকটা জমিজমা বিক্রি করে বিপুল টাকা সেই পুলিশ কর্তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএনপি না-করলে ‘এনকাউন্টার’ করা হবে না আশ্বাস পেয়ে দেশে ফেরেন পিয়াস। কয়েক মাস পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে অবশেষে এখন কুয়েতে।
কুয়েতে কেমন আছেন পিয়াস? তার জবাব, ক্রীতদাসের মতো। প্রতি ভোটের আগে আশায় থাকি, সরকার কি এ বার বদলাবে? ২০১৪ সালে ভোট গেল, ২০১৯ ও ২০২৪ সালেও ভোট হলো। ভাবতাম, আরবের শেখদের মতোই কি বাংলাদেশে শেখ পরিবারের চিরস্থায়ী শাসন কায়েম হল? আমার কি দেশে ফেরা হবেই না?
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার দিনেই বার্তা পাঠিয়েছিলাম—‘পিয়াস, দেশে ফেরার সময় হয়েছে।’ ছোট্ট জবাব ছিল, ‘জ্বি দাদা।’ তার পরেই টেলিফোন। উচ্ছ্বাস ধরছে না যেন। কে বলবে, মাস কয়েক আগে নির্বাচনের ঠিক আগে বার্তা পাঠিয়েছিলেন পিয়াস, ‘আমি আর এই বাংলাদেশে থাকতে চাই না! অন্য কোনও দেশের নাগরিকত্ব পেতে সাহায্য করবেন দাদা?’ শুক্রবার ফোনে জানালেন, যত শিগগিরই সম্ভব পরিবারের কাছে ফিরবেন।
বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে পিয়াসের কথা বলেছিলাম। কেউই তাকে চিনতে পারেননি। আবার সাহায্যের আশ্বাসও দিতে পারেননি। তারাও যে তখন, কবে জেলে আছেন, কবে বাইরে—নিজেরাও জানেন না। কিন্তু পুলিশের ওপরে বিরোধী দলের কর্মীদের আক্রোশের কারণও বুঝি কম নেই। মানবাধিকার কর্মীদের হিসাবে, এভাবে পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে ৫০০ এর বেশি বিরোধী কর্মী আর কোনও দিন ফিরে আসেননি। পিয়াস সৌভাগ্যবান, ‘আয়নাঘর’ থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরেছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |