
সম্প্রতি ইন্টারনেট মাধ্যমে একটি তথ্য প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে দেশের সব নাগরিককে ১ হাজার ৪০০ টাকা করে ভাতা দেয়া হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমন দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।
ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিটির সঙ্গে ভাতা পেতে আবেদনের জন্য একটি ওয়েবসাইটের লিংকও জুড়ে দেয়া হচ্ছে। যেখানে প্রবেশ করলে শুরুতেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি ছবি দেখা যায়।
আর তার ঠিক নিচেই বড় অক্ষরে ‘১৪ই এপ্রিল বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে বিশেষ ভাতা’ লিখাটি দেখতে পাওয়ার যায়। পাশাপাশি এর ঠিক নিচেই খানিকটা ছোট অক্ষরে ‘দেশের সকল নাগরিকদের জন্য ১৪০০ টাকা নববর্ষ ভাতা’ শীর্ষক ঘোষণাটিও দেখা যায়।
তবে প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বরং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ১ হাজার ৪০০ টাকা দেয়ার এই প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

এ নিয়ে অনুসন্ধানে ওয়েবসাইটটির খানিকটা নিচের দিকে স্ক্রল করতেই একটি অনলাইন ফর্ম পাওয়া যায়। যেখানে ভাতা পেতে আবেদনের কিছু নিয়মের পাশাপাশি ফর্মটি পূরণ করে জমা দেয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তীতে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় ভুল তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করে জমা দিলে সেটি নতুন একটি পেজে নিয়ে যায়।
ওই পেজে বোনাস পাওয়ার একটি অভিনন্দন বার্তা লিখা থাকে। সেই সঙ্গে টাকা পেতে একটি বিকাশ নম্বরসহ আরও কিছু তথ্য দিতে বলা হয়। পরে ভুয়া বিকাশ নম্বর ও পিন দিলে তৃতীয় ধাপে ওয়েবসাইটটি ‘Ripon Enterprise’ নামে একটি বিকাশ মার্চেন্ট পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়। অর্থাৎ, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত পিন নম্বর সংগ্রহ করা এবং বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ, গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও নববর্ষ উপলক্ষে সবাইকে ভাতা দেয়ার দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। সুতরাং, বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে দেশের সব নাগরিকদের জন্য ১ হাজার ৪০০ টাকা নববর্ষ ভাতা দেয়ার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।