জাতীয়: সারজিস বলেন, ‘যারা শুধু তেল দিয়ে, তোষামোদ করার জন্য ক্ষমতাসীনদের সঙ্গ দিয়েছে, আজকে তারা আবার তাদের রূপটি গিরগিটির মতো পরিবর্তন করেছে। যখন এত বড় একটি আন্দোলন ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে হলো, দেশে নতুন করে একটি সংস্কার শুরু হলো ওই মুহূর্তে তারা এসে সকলে রাস্তায় নামছে অনেক অনেক অন্যায় দাবি নিয়ে। আমি দেখেছি, অনেকে নেমেছে অনেক অযৌক্তিক দাবি নিয়ে।’
সারজিস বলেন, ‘আমি স্টুডেন্টদের (এইচএসসি পরীক্ষার্থী) প্রশ্ন করতে চাই, আমি ধরে নিচ্ছি কোনো স্টুডেন্ট যদি আমার কাছে দাবি করত, যে ভাইবোনেরা আমাদের আহত হয়েছে তাদের পরীক্ষা বাদ দিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, এটা যৌক্তিক। আমি ধরে নিচ্ছি, তাদের (এইচএসসি পরীক্ষার্থী) প্রস্তুতির বাইরে তারা অনেকদিন ছিল, মেন্টাল জায়গাটিতে ওই স্ট্যাবিলিটি নেই, এসব ক্ষেত্রে তারা সময় চাইতে পারত, মার্কস কম চাইতে পারত। তারা কোনো কিছু না করে পরীক্ষা বাতিল চায়।’
‘আমি বিশ্বাস করি, যারা স্টুডেন্ট মেধা-যোগ্যতার বিশ্বাস করে তারা এই দাবি করতেই পারে না। তারা আমাদের যৌক্তিক কিছু সুযোগ দেখাতে পারে। কিন্তু যারা ওখানে (সচিবালয়ে) গিয়েছে আসলে তারা কোনো দিন সুষ্ঠু একটি প্রতিযোগিতা কিংবা মেধার যে মূল্যায়ন সেটিকে প্রতিনিধিত্ব করে না। এই জায়গা থেকে পরীক্ষা বাতিলের যে সিদ্ধান্ত এসেছে সেটি আমাদের জায়গা থেকে মনে হয়েছে এটি একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নয়।’ সারজিস বলেন, ‘এরকম করে প্রতিটি সেক্টরে আমরা দেখছি, অনেকেই হুজুগে বাঙালির মতো রাস্তায় নামছে বিভিন্ন জায়গায়। এগুলো করে আলটিমেটলি স্ট্যাবল অবস্থা আসবে কী না! আপনি এত দিন ধরে যে ক্ষতটি তৈরি করেছেন, সেই ক্ষত পূরণ হবে কী না।’
সারজিস বলেন, ‘কিছু সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে পুরো বাংলাদেশে, যারা শুধু ব্যক্তি স্বার্থ বুঝে। দেশের কথা এখনও চিন্তা করছি না, পূর্বেও করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। এই মানুষগুলো দেশকে সময় না দিয়ে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় না দিয়ে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় রাস্তায় নেমে পড়েছে। অস্থিতিশীল পরিবেশকে স্থিতিশীল হতে দিচ্ছে না।’
বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা লং মার্চ নিয়ে সারজিস বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন দেখুন, আমরা কবে লং মার্চ দিয়েছিলাম। আমাদের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, তখন ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের জন্য আমরা লং মার্চ দিয়েছিলাম। আজকে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সংগঠন দেখি প্রথম দিন লং মার্চ কর্মসূচি দেয়। এই জিনিসটি কী বোঝায়? এই জিনিসটি বোঝায় তারা আসলে সর্বশেষ সময়ে গিয়ে যেটি করতে চাচ্ছে এটি হচ্ছে- তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। অথচ তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে যদি আমরা সাড়া না দিতাম, তারপর তারা যদি সেখানে যেত সেটি যৌক্তিক, মানা যায়। এটি না করে তারা এখন যেটি করছে তা কখনোই কাম্য নয়, যৌক্তিক নয়।’
পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়: সারজিস পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক নয়: সারজিস
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে সারজিস বলেন, ‘আমার স্পষ্ট কথা, আপনি যদি আমাদের কাছে না আসেন বা এই সরকারের কাছে না যান কিংবা কোনো লিগ্যাল অ্যাপ্রোচে না যান তাহলে আমরা ধরে নেব, আপনারা রাইট ওয়েতে যাওয়ার মানসিকতা ধারণ করেন না। আপনাদের কোনো ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা এটি আপনাদের বলে দিচ্ছি, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে আপনারা যদি প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মসূচিতে যান তাহলে পরবর্তীতে কোনো অপ্রত্যাশিত সিচুয়েশনে আপনারা আমাদের সহযোগিতা পাবেন না। এটি আমরা আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি।’
আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সচিবালয়ের গেট ভেঙে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে একটি অস্থিতিশীল এবং অপ্রত্যাশিত পরিবেশ তৈরি করেছেন। সচিবালয়ের ১৮ তলায় গিয়ে শিক্ষাসচিব থেকে শুরু করে আমাদের সবাইকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। পরে সচিব শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষা বাতিল করার বিষয়কে আমরা কখনোই সমর্থন করি না। কারণ পরীক্ষা ছাড়া একটা শিক্ষার্থীকে কখনোই মূল্যায়ন করার সুযোগ নেই।
পরীক্ষার্থীদের দাবির মুখে গতকাল মঙ্গলবার স্থগিত থাকা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকারের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনিবার্য কারণবশত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর স্থগিত পরীক্ষাসমূহ বাতিল করা হলো। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |