দুই কন্যা সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার পর নিজেও কেরির ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন এক গৃহবধূ। বুধবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার খাটুরা সরকার বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, নিহত গৃহবধূর স্বামী ও শিশুদের বাবা আশরাফ আলী বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে ক্যাজুয়াল এ চাকরি করতেন। প্রায়শই পারিবারিক কলহের জের ধরে আশরাফ ও শারমিন দম্পতির মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হত। শারমিনের স্বামী নেশাগ্রস্ত হয়ে তার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি চলছিল। এরই মধ্যে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে সকালে দুই কন্যা সন্তান তিন বছরের নওরিন আক্তার ও পাঁচ বছরের রওজা আক্তারকে কীটনাশক খাইয়ে নিজেও কেরির ট্যাবলেট খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন গৃহবধূ শারমিন। পরে এলাকাবাসী তাদের আত্মচিৎকারে এগিয়ে আসেন।
এক পর্যায়ে তাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে স্বজনরা হাসপাতালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা, মুজাহিদ সরকার ঘটনাটিকে মর্মান্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘পারিবারিক কলা সম্পর্কে তিনি এলাকার সর্দার মাতবর কিংবা প্রতিবেশী থেকে জানাতে পারতেন। তা না করে দুই নিষ্পাপ শিশুকে নিয়ে তিনি আত্মহত্যা পথ বেছে নিলেন। এটি কোনো সমাধান নয়। আমরা তাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।’ এলাকার অপর বাসিন্দা রাসেল সরকার বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে নিহতের বাড়ি ঘরের পাশাপাশি আশপাশের বাড়ি ঘরের বাসিন্দারা তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। ওই গৃহবধূ আশপাশের কাউকে ঘটনা না জানিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। আমরা এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করছি। আত্মহত্যার পেছনে কেউ প্ররোচনাজনিত কারণে জড়িত থাকলে তদন্ত করে তাকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন মিতুল জানান, হাসপাতালে আনার পর শিশু দুটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এর অল্প কিছুক্ষণ পর প্রাণ হারায় শিশুদের মা শারমিন আক্তার। তিনি প্রাথমিকভাবে ধারনা করছেন কেরির ট্যাবলেট খেয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। তবে পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত তানভীর আহমেদ জানায়, ঘটনাটি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কী কারণে ওই গৃহবধূ তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী আশরাফ আলী ও তার কাছের স্বজনরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |