প্রচ্ছদ সারাদেশ থানায় বসে ওসির ‘খাম’ আদান-প্রদানের ভিডিও ফাঁস

থানায় বসে ওসির ‘খাম’ আদান-প্রদানের ভিডিও ফাঁস

সারাদেশ:রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার ওসি চেম্বারে খাম লেনদেনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (৬ জুলাই) ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও নিয়ে রাজশাহীতে শুরু হয়েছে তোলপাড়া। যদিও দেখা যাওয়া ওই খামে আদৌ কি আছে তা নিশ্চিত হওয়ার আগেই, খামে ভরে টাকা নিচ্ছেন ওসি এমন মন্তব্য করে ভিডিওটি ভাইরাল করা হয়েছে।

তবে যে যুবক খামটি ওসিকে দিয়েছেন তার দাবি, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্মরত বোনের শ্লীলতাহানির মামলার নথিপত্র একটি খামে করে ওসিকে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই খামে করে নথিপত্র ওসিকে দেয়া হয়।

ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, ওসি মাহবুব আলম তার চেয়ারে বসে আছেন। সামনে বসে থাকা এক ব্যক্তি বলছেন, মাহবুব ভাই, ভাই উঠব ভাই। একটু কথা বলে যাই। ওসি তার দিকে মনোযোগ দিয়ে বলেন, ‘হুম’। সামনে বসে থাকা যুবক বলেন, ভাই, একটা ছোট খাম দেন। এ সময় ওই ব্যক্তি বলেন, মাহবুব ভাই, আপনি আমাকে চিনেন, জানেন, বোঝেন। আমি বিপদে পড়ছি বলেই আপনার কাছে আসছি ভাই। আমি বিপদেই পড়ে এসেছি। দেন একটা খাম দেন।

এ সময় মাহবুব আলম তার টেবিলের ড্রয়ার টেনে একটি লম্বা খাম বের করে দেন। এরপর ওসি আরেক ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে বলেন, বুইঝেন। তাকে অবশ্য আগেরটাও আমি হেল্প করসি। ওই ব্যক্তি তখন বলেন, আমি জানি, আমি মাহবুব ভাইয়ের কাছে আসলে কাজ হবে। এ সময় ওসি বলেন, না, যথেষ্ট হেল্প করসি। কথা বলতে বলতে সামনে থাকা ওই যুবক ভরা খাম টেবিলে এগিয়ে দিলে ওসি সেটি নিয়ে ড্রয়ারে রেখে দেন।

ওই যুবক বলেন, আমি না পারতে এ পর্যন্ত আসলাম। বিশ্বাস করেন! আমি আরেকদিন এসে ডিটেইলস বলব তখন বুঝবেন ও আমাকে কী পর্যায়ে পেরেশানিতে নিয়ে আসছে। না হলে আমি আপনার কাছে আসতাম না যদি অফিসিয়ালি সলিউশন করতে পারতাম। সে জিএম স্যারের কাছে ৪০ জন লোক নিয়ে গেছে রিমুভ ফরম সার্ভিস করার জন্যে আমার বোনের। আমি কী বোঝাবো বলেন! অন্যায় যে করে, আর যে সহে- দুজনে সমান অপরাধী।

জানা গেছে, ওসিকে খাম দেয়া যুবকের নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তার বাড়ি ভদ্রা বৌ-বাজার এলাকায়। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার বোন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্মরত। সম্প্রতি তিনি কর্মকর্তার দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সেই মামলার নথিপত্র একটি খামে করে ওসিকে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। বেশি লোক থাকার কারণে গোপন নথিপত্র একটি খামে দেয়া হয়েছিল। সেটি কেউ ভিডিও করে ভাইরাল করেছে। ওই খামে কোন টাকা দেয়া হয়নি। আর আমরা তো ভিকটিম। আমরা কেন পুলিশকে টাকা দিতে যাব।

বিষয়টি নিয়ে ওসি মাহবুব আলম বলেন, আমি পাবলিকের কাছ থেকে টাকা খাই না। মামলার কিছু নথিপত্র একজন যুবক খামে করে দিয়ে গিয়েছিল। সেখানে মিডিয়া কর্মীসহ অনেকই ছিলেন। সেটি কেউ ভিডিও করে রেখেছিল। পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য সেই ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে। বিষয়টি কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান ওসি মাহবুব আলম।

এদিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রিমা থানার ওসির একটি খাম লেনদেনের ভিডিও কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।