প্রচ্ছদ হেড লাইন ‘তোদেরকে বলেছিলাম মারিস না, তোরা বলেছিলি অপারেশন শুরু হয়ে গেছে’

‘তোদেরকে বলেছিলাম মারিস না, তোরা বলেছিলি অপারেশন শুরু হয়ে গেছে’

কুমিল্লার মুরাদনগরের করইবাড়ি গ্রামে মা ও দুই ভাইবোনকে নির্মমভাবে হারানোর শোকে আদালত প্রাঙ্গণে বুকভাঙা আর্তি জানালেন নিহত রোকসানা আক্তার রুবির বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। গতকাল শনিবার বিকেলে পুলিশি প্রহরায় অভিযুক্তদের জেলহাজতে পাঠাতে নেওয়ার সময় কুমিল্লা আদালত চত্বরে আটক আসামিদের দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

রিক্তা চিৎকার করে বলেন, ‘তোদেরকে বলেছিলাম তোরা আমার মা-বোনকে মারিস না। তোরা কি বলছস? তোরা বলেছিলি অপারেশন শুরু হয়ে গেছে। তোরা কিভাবে মারলি? আমি তোদের সবার ফাঁসি চাই। তোদের প্রত্যেকের ফাঁসি চাই আমি।’

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, ‘যে শত্রু আমার পেছনে লেগেছে, তারা এখন আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমি কখন মারা যাই, আমি জানিনা। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি দেশবাসীর কাছে বিচার চাই। সবার কাছে অনুরোধ আমার মা, ভাই-বোনের হত্যার বিচার কইরা আমাকে দেখাই দিবেন। আমি প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।’

প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই সকালে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানার অন্তর্গত করইবাড়ি গ্রামে এক পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন—খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৫)। গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (৩০)।

এ ঘটনায় নিহত রুবি আক্তারের বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে পরদিন শুক্রবার রাতে বাঙ্গরা বাজার থানায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৮ জন আসামিকে আটক করেছে। তারা হলেন—করইবাড়ি গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে বাচ্চু মিয়া (৫৫), মৃত ছপি মোল্লার ছেলে রবিউল আউয়াল (৫৫), বাচ্চু মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান (৪২), রবিউল আউয়ালের ছেলে মো. বায়েজ মাস্টার (৪৩), হায়দরাবাদ এলাকার মালু মিয়ার ছেলে দুলাল (৪৫) ও তাঁর ছেলে আকাশ (২২), এবং আকুবপুর ইউনিয়নের পীর কাশিমপুর এলাকার সবির আহমেদ ও নাজিম উদ্দিন বাবুল।

গোটা এলাকায় এখনও চাঞ্চল্য বিরাজ করছে, আর হতবিহ্বল পরিবারটি নিরন্তর বিচারপ্রার্থনায় দিন কাটাচ্ছে।