
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে এখনো ৭টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জোট ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে এবং কয়েকটি আসনে দলীয় কোন্দল বা পারিবারিক ‘নীতি’র কারণে এই মনোনয়ন স্থগিত রেখেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই বাকি আসনগুলোতে মনোনয়ন ঘোষণা করা হবে। বিতর্কিত আসনগুলোতেও পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জোট ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের জন্য ঢাকায় অন্তত তিনটি আসন ছাড় দেওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি।
ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী, ক্যান্টনমেন্ট): এই আসনটি যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান (পার্থ)-কে ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি। পার্থ ইতিমধ্যেই তাঁর নির্বাচনী এলাকায় পোস্টার লাগিয়ে প্রার্থিতা জানিয়েছেন।
ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর, আদাবর): এই আসনটি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তিনিও এলাকায় পোস্টার লাগিয়ে প্রচার শুরু করেছেন।
ঢাকা-৭ (লালবাগ, চকবাজার): এই আসনটি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হককে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা আছে। যদিও মামুনুল হকের সম্মতি এখনও পাওয়া যায়নি।
ঢাকা-৯ (সবুজবাগ, খিলগাঁও): এই আসনে মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাসকে ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। এবার ‘এক পরিবার এক প্রার্থী’ নীতি নেওয়ার কারণে আফরোজা আব্বাস বাদ পড়তে পারেন বলে দলে আলোচনা আছে। নীতি শিথিল হলে তিনি মনোনয়ন পেতে পারেন। বিকল্প হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তাসনিম জারাকে সমর্থন দেওয়ার আলোচনাও আছে।
ঢাকা-১০: এখানে বিএনপির চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সহায়ক কমিটির সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম (রবি) আলোচনায় আছেন। এর মধ্যে অসীম আশা করছেন, নোয়াখালী অঞ্চলের ভোটারদের সংখ্যাধিক্য দল বিবেচনা করবে।
এই আসনে সম্প্রতি ভোটার হওয়ার আবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন বা বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারেন।
ঢাকা-২০ (ধামরাই): এ আসনে ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজ উদ্দিন এবং যুবদলের ঢাকা জেলা সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস (মুরাদ) এগিয়ে আছেন।
ঢাকা-১৮ (উত্তরা, বিমানবন্দর): এই আসনে জোটের শরিক, নাকি দলীয় প্রার্থী দেওয়া হবে, তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। এখানে প্রার্থী বদলের পাশাপাশি স্থানীয় দলীয় বিভক্তি স্পষ্ট। ২০২০ সালের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে ঠেকাতে অন্য তিন মনোনয়নপ্রত্যাশী—মোস্তাফিজুর রহমান (সেগুন), এম কফিল উদ্দিন এবং মোস্তফা জামান—একজোট হয়েছেন। তাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধকে) প্রার্থী করার পক্ষে।
ঢাকা-১২: এই আসনে প্রার্থী সাইফুল আলম (নীরব)-এর বিরুদ্ধে মনোনয়নপ্রত্যাশী আনোয়ারুজ্জামানের অনুসারীরা গতকাল শনিবারও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এবং প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা-১৫: কাফরুল এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনে শফিকুল ইসলাম খানকে (মিলটন) প্রার্থী করায় দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পরিবর্তনের অভিযোগ জানানো হয়েছে।
মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, শিগগিরই খালি আসনগুলোতে মনোনয়ন ঘোষণা করা হবে এবং যে আসনগুলোর প্রার্থী নিয়ে বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে পরিবর্তন আসতে পারে।
সূত্র : জনকণ্ঠ










































