প্রচ্ছদ জাতীয় ড. ইউনূস সবার সামনে আইসা বলুক যে, আমাকে এভাবে করে ক্রাইসিসে ফেলা...

ড. ইউনূস সবার সামনে আইসা বলুক যে, আমাকে এভাবে করে ক্রাইসিসে ফেলা হচ্ছে

সম্প্রতি মিডিয়ায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তার কাছ থেকে সমসাময়িক রাজনৈতিক আলোচিত বিষয়, জণগণের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলোর বাস্তবতা, অভ্যুত্থানের সরকারের বাধা, নিবার্চন নিয়ে সাধারণ জনগণের আগ্রহ সর্ম্পকে জানতে চাওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, শুরু থেকে, আমার কাছে এখন সেই আলাপ গুলো খুবই অ্যাবসার্ট মনে হয়, আর অপ্রয়োজনীয় মনে হয় সত্যি কথা বলতে। কারণ ৫ আগস্ট, ৬ আগস্ট, ৭ আগস্ট দেশের পরিস্থিতি খারাপ ছিল না! খুবই খারাপ ছিল এবং সবারই একটা কথা ছিল যে দেশে একটা গভর্মেন্ট লাগবে। এবং সবার মধ্যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে কিন্তু একটা আনরেস্ট কাজ করেছে, গভর্মেন্ট হচ্ছে না কেন?

৭ তারিখে বিশেষ করে আমার মনে আছে যে, আমি আমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলছিলাম এবং সবার কথা হচ্ছে, গভর্মেন্টটা তো দ্রুত হওয়া লাগবে। কারণ যে এলাকায়, এলাকায় ডাকাতি হচ্ছে। তো এর পরিস্থিতিতে যখন গভর্নমেন্ট ফর্ম হচ্ছে, তখন আমি বড় মোটা দাগে এখানে বিশেষ কোন বিরোধিতা দেখি নাই যে, এখানে কারা মানে উপদেষ্টা হিসেবে আসছেন বা আসছেন না। এসব বিষয় নিয়ে কারো খুব বেশি আপত্তি আমি দেখিনি।

আপত্তি আসা শুরু করেছে, যখন আসলে উপদেষ্টা এসপার আওয়ার মানে আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবে আসলে তারা অ্যাক্ট করছেন না। তখন যেটা হয়েছে, বিভিন্ন পক্ষ মানে আমি যেহেতু হচ্ছে দেখছি যে, তারা ব্যর্থ হচ্ছে। তো আমার এখন কাজ হচ্ছে ফুটবলটাকে খেলা মানে ফুটবলটা আসলে কে! কার!

কমপ্লিটলি এখন এসে, কারণ অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে যেটা রনি ভাই বললেন যে, অভ্যুথান ব্যর্থ হলে দায় সবাইকে নিতে হবে। কেউ তো একা গালি খাবে বা একা মাইর খাবে, বিষয়টাতে এরকম না। কারণ আর আরেকটা বিষয় হচ্ছে কি এখানে, এখানে আমি যেটা ফিল করেছি, ওভার দা ইয়ারস, যে আমাদের দেশে তো আসলে রাষ্ট্র বলতে আমরা টেকনিক্যালি যা বুঝি, টেক্সট বুকের মধ্যে পলিটিক্যাল সাইন্সে যেটা শোনাই, আমাদের এখানে সেই রাষ্ট্রটা এক্সিস্ট করে না, কখনোই করে নাই।

৭১ এর পরে একটা বিশাল সুযোগ আসছিল, সেই সুযোগ শেখ মুজিবুর রহমান নিজের পায়ে পৃষ্ঠ করে নষ্ট করেছেন এবং তার পরবর্তী সময়ে যা হয়েছে, সেটারই একটা ধারাবাহিকতা। এবং শেখ হাসিনা যেটা করেছেন গত ১৫ বছরে, উনি জাস্ট সুযোগটাকে ব্যবহার করেছেন, যেহেতু রাষ্ট্র তো ভঙ্গুর ছিলই এবং এই সিস্টেম তো করাপ্টেড ছিলই আগে থেকে। হয়তো ১০ টাকার কাজটা তখন ২ টাকায় হইতো। কিন্তু উনি যেটা করেছেন যে, ১০ টাকা খেয়েছেন এবং মানে যার যার, সবার পকেটে একটু একটু করে দিয়েছেন।

প্রশ্নকর্তা জানতে চান, উমামা ফাতেমা, এটা একটু বলুন যে, এটা বন্ধ হবে কিভাবে? উপায় কি?

জবাবে তিনি বলেন, এগুলো একটা দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, মানে আমি বলবো না যে, এখানে একটা ফর্মুলা দিয়ে দিতে পারবো না যে, এই ফর্মুলাতেই ভাই এটা বন্ধ হবে। কিন্তু আমি যেটা ফিল করি ভিতর থেকে যে, জনগণকে আসলে কেউ ধারণ করে না। আমি যেটা গত পাঁচ মাসে খুব করলেই বুঝতে পারছি যে, এখানে আসলে অভ্যুত্থান নিয়ে যে পরিমাণ কাড়াকাড়ি হয়েছে, সরি টু সে আমার আমি, মানে আমার যখন ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে কথা বলি বা সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলি, ওরা অভ্যুত্থান নিয়ে ইন্টারেস্টেডই না আর, মানে ওইটা নিয়ে কথা বলতে আর খুব বেশি, আহতরাই কথা বলতে খুব বেশি সাহস পায় না।

এবার প্রশ্নকর্তা জিজ্ঞেস করেন, তারা কি চায়?

জবাবে তিনি বলেন, তারা চায়, তারা এড্রেসড হোক। আমি যদি সাধারণ মানুষ হই, জনগণ হই, আমার সমস্যাগুলা তো রাস্তায় এড্রেসড হইতে হবে। আমি তো, আমার না আমি সেটা আমার অভ্যুত্থানের সরকারের কাছ থেকে পাচ্ছি! না আমি আমার এখানে পলিটিক্যাল পার্টি গুলো থেকে পাচ্ছি!

এজ এ জনগণ, আমি আমার রিফ্লেকশনটা দেখব কিসের মধ্যে! আমার রাষ্ট্র তো রিফ্লেকশন তৈরি করতে পারতেছে না। এটা একটা বড় ক্রাইসিস যেটা, মব তৈরি হওয়ার পিছনে একটা বড় ধরনের রিজন হয়ে গেছে। এখন এটার একটা কারণ হচ্ছে একদম শুরু থেকে এখানে নির্বাচনের একটা কথা, যে সবাই নির্বাচন দিতে হবে, নির্বাচন দিতে হবে।

আওয়ামী লীগ তো নির্বাচন না দিয়ে খুব দেদারসে ছিল, সত্যি কথাও খুব দেদারসে ছিল। ইভেন মানুষ তো লাইফ সংকুচিত হয়ে আসছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, এটা পরেও কম্প্রমাইজ করেছিল।

তিনি আরো বলেন, ইভেন আমি বিশ্বাস করি যে, আবু সাঈদকে যেদিন মেরে ফেলে, ১৮ তারিখেও যখন এতগুলো খুন করে, শেখ হাসিনা যদি সামনে এসে জাস্ট বলতো যে, ‘আই এম এক্সট্রিমলি সরি’ আমি যা করেছি তার জন্য আমি দুঃখিত, এই রাস্তায় আর আন্দোলন হইতো না।

কারণ এটা এটা হয়ে গেছে, গত ১৫ বছর মানুষ নিজেকে স্কুইজ করতে করতে এমন একটা জায়গায় নিয়ে আসছে, যে তার কাছে রাস্তায় নামাটা এটা অনেক বড় ব্যাপার। এবং এখানকার মিডেল ক্লাস সহজে রাস্তায় নামে না। এখন ওই মিডেল ক্লাস যখন রাস্তায় নামছে এবং ওই মিডেল ক্লাস এখনো পর্যন্ত দেখতেছে, তার সমস্যাগুলো এড্রেস হচ্ছে না, সে বঞ্চিত হচ্ছে, তখন তো অবভিয়াসলি মানে নির্বাচন নিয়ে কারো আগ্রহী নাই।

মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, এখনো পর্যন্ত নির্বাচন নিলে যে ভালো একটা দেশ হবে, এটা নিয়ে কারো মতামত নাই। সবার কথা হচ্ছে যে, আমি তো একটা চেঞ্জ দেখতে চাইছিলাম যে আমি, টাকা না দিয়ে, ঘুষ না দিয়ে, আমার চাকরি হবে। আমি তো চেঞ্জটা দেখতে চাইছিলাম কি?

আমার রাস্তায় একটা জ্যানজটের একটা অভিযোগগুলোর কোন, আসলে এটা তো গভর্মেন্টের একটা প্ল্যান ফুলে আগাতে হবে। খুবই প্ল্যানফুলি আগাতে হবে। এখানে যদি পদায়ন বদলি-দুনিয়ার মাথা খেয়ে ফেলতেছে, মানে বলতে গেলে এই পদায়ন-বদলি এগুলো করে করে এবং আমি স্টিল নাও দেখতেছি, এই পদায়ন বদলি নিয়েই আছে লোকজন, মানে কি ভাই! পদায়ন-বদলি, আর কত!

মানে পাঁচ মাস আগে একজনের পদোন্নতি বা কোন একটা বদলি হয়েছে, এখন সে তার আবার লাগবে। কারণ যেন সে হচ্ছে, বঞ্চিত ছিল। ইটস অ্যাবসার্ট, মানে যা হচ্ছে দেশে, এটা অ্যাবসার্ট এবং আমার জাস্ট অবাক লাগে এটা, তো গভর্মেন্টের সমস্যাটা হচ্ছে কোথায়?

তিনি বলেন, সে যখন ফিল করছে যে, ভাই আমাকে এরকম স্কুইজ করা হচ্ছে। সে জনগণের কাছে বলবে যে, ভাই আমি এই পরিস্থিতিতে আছি। ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস জনগণের সামনে আইসা বলবে এবং জনগণ চায় যে, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস সবার সামনে আইসা বলুক যে, আমাকে এভাবে করে ক্রাইসিসে ফেলা হচ্ছে।

তাহলে জনগণই তার সাথে আসবে কারণ এটা তো অভ্যুত্থানের সরকার। মানুষ ফিল করে যে ভাই, এটা অভ্যুত্থানের সরকার, কিন্তু অভ্যুত্থানের সরকার ফিল করে না যে, এটা অভ্যুত্থানের সরকার। ক্রাইসিসটা ওই জায়গায় হইছে এটার অভ্যুত্থানের একটা বড় ধরনের রিপারগেশন আমরা, স্টিল না ফেস করি।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।