
ড. মোহাম্মদ ইউনূসের কর্মকাণ্ড, সিদ্ধান্ত, এবং প্রশাসনিক ভূমিকা ঘিরে ইতোমধ্যেই জনমনে নানা প্রশ্ন, মতামত ও বিশ্লেষণ তৈরি হয়েছে । সম্প্রতি সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে ড. ইউনূসের সাফল্য ও ব্যর্থতা ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন ।
তিনি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ পেশ করেন । প্রশ্ন তোলা হয়েছে – “তিনি কি ধীরে ধীরে ব্যর্থতার দিকে এগুচ্ছেন? নাকি সফলতার দিকে যাচ্ছেন?”
এ প্রসঙ্গে মোস্তফা ফিরোজ জানান,“এই নিয়ে দুটি মতামত বা বক্তব্য আপনাদের সামনে আনবো – একটা সোশ্যাল মিডিয়ার, আরেকটি হচ্ছে একজন রাজনৈতিক নেতার মতামত ও বক্তব্য ।”
প্রথমেই মোস্তফা ফিরোজ তুলে ধরেন একজন সাধারণ ব্যবহারকারী জাকির মোল্লা–এর একটি পোস্ট । তিনি বলেন,“আমি তাকে চিনি না, জানিনা, তবে তার একটা পোস্ট এখানে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি ।”জাকির মোল্লা লিখেছেন –“অলৌকিকভাবেই হোক আর ঝড়ে বক পড়ে ফকিরের কেরামতি বাড়ে, সেই নীতি হোক, কথাগুলো কিন্তু সত্যি ।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন –গত ছয় মাসে ড. মোহাম্মদ ইউনূস দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরেছেন । লুট হওয়া ব্যাংকগুলো ধ্বংস না করে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তুলেছেন অর্থাৎ সেগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন ।
তিনি উল্লেখ করেন –২০০ টাকার পেঁয়াজ এখন ৪০ টাকা,৪০০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ৫০ টাকা,১০০ টাকার তরকারি এখন ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ।জাকির মোল্লা বলেন –“দাম বাড়লে আমরা পোস্ট দেই, বলি আগে ভালো ছিলাম, কিন্তু কমলে কিছু বলি না । এটা মুনাফেকের কাজ ।”
তিনি আরও বলেন –“থ্রি জিরো থিওরির জন্য উনি আবার নোবেল মঞ্চে দাঁড়াবেন মনে হয় । উনি চা বিক্রেতা নন, একজন উচ্চশিক্ষিত ভদ্রলোক । ভালো কাজের প্রশংসা করাটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ।”
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে:এরপর মোস্তফা ফিরোজ তুলে ধরেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না–র বক্তব্য । তিনি বলেন ,“ড. ইউনূস একের পর এক ম্যাজিক দেখাচ্ছেন ।”
তিনি আরও বলেন ,“প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ড. ইউনূসের কাজের ধরন নিয়ে আমি বলেছি, তিনি খুবই নির্মোহভাবে কাজ করছেন । তার প্রতিটি কর্মেই যেন একধরনের ম্যাজিক দেখা যাচ্ছে ।”
তার বক্তব্যে ছিল,রোজার মধ্যে দ্রব্যমূল্য কমেছে,ঈদযাত্রা ছিল তুলনামূলক সুন্দর,বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল নিরবিচ্ছিন্ন ।“এই কারণেই বলি, ড. ইউনূসকে আমাদের সবার সহযোগিতা করা দরকার ” বলেন মান্না ।
সার্বিক বিশ্লেষণে মোস্তফা ফিরোজ বলেন, জনগণের একাংশ মনে করে, ড. ইউনূস সঠিক পথেই আছেন । দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা তাঁর ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ।
তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে ,“আসলে কি ড. ইউনূস খুব ভালো করছেন? এজন্য মানুষের ভোট, নির্বাচন, কিংবা আন্দোলনের বিষয়ে জনগণের আগ্রহ কমে গেছে? মানুষ কি এখন মোটামুটি ভালো আছে?”তবে স্পষ্ট যে, দেশের মানুষের একটি বড় অংশ এখন স্থিতিশীল বাজার, নিরাপদ জীবনযাত্রা, ও সহনীয় ব্যয়েই তৃপ্ত থাকতে চাইছে ।
সূত্র:জনকণ্ঠ