জাতীয়: শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর সরকারের ক্রমাগত হয়রানি বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন ১২ মার্কিন সিনেটর। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীকে প্রশ্নে করেন সাংবাদিকরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কোনো মন্তব্য নেই জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলেন,
আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার। উগান্ডার কামপালায় ন্যাম এবং সাউথ সাউথ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা দেশের নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় আইন ও বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার করে হয়রানি করা হচ্ছে ড. ইউনূসকে- এমন দাবি করে হয়রানি না করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন ১২ সিনেটর। তারা হলেন- মেজরিটি হুইপ ডিক ডারবিন, টড ইয়ং, টিম কাইন, ড্যান সুলিভান, জেফ মার্কলে, জিন শাহিন, এড মার্কি, শেরোড ব্রাউন, পিটার ওয়েলশ, শেলডন হোয়াইটহাউস, রন ওয়াইডেন এবং কোরি বুকার।
সিনেটররা চিঠিতে বলেছেন, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে ১৫০টির বেশি ভিত্তিহীন মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। সেই সাথে বাংলাদেশে সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার অবসানের আহ্বান জানান।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ জানুয়ারি) ইলিনয়ের সিনেটর ডিক ডারবিনের ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা সিনেটরদের চিঠি-
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
আমরা আপনাকে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্রমাগত হয়রানি এবং আরও বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে লিখছি।
এক দশকের বেশি সময় ধরে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে ১৫০টির বেশি ভিত্তিহীন মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমে অনিয়মের উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া, যার বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে। খ্যাতনামা এই সংস্থাগুলো বিচারের গতি ও বারবার ফৌজদারি কার্যধারার ব্যবহারকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচারিক অপব্যবহারের লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশে সুশীল সমাজের সদস্যদের অনেকেও এমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং ক্রমশ তাদের কাজের পরিবেশ সীমিত হয়ে আসছে, ড. ইউনূসকে বারবার ও দীর্ঘসময় ধরে হয়রানি যার প্রতিচ্ছবি।
ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ড. ইউনূসের অগ্রণী ভূমিকা অসংখ্য বাংলাদেশিসহ বিশ্বের কোটি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বৃহত্তর আর্থিক প্রতিশ্রুতির সুযোগ করে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার অগ্রণী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে মার্কিন কংগ্রেস তাকে কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল দেয়। চলমান রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের প্রচেষ্টাকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে, যার মধ্যে আছে অভিন্ন স্বার্থে ঘনিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা। অধ্যাপক ইউনূসকে হয়রানির অবসান এবং অন্যদের সরকারের সমালোচনার মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা চর্চা করার সুযোগ এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |