প্রচ্ছদ জাতীয় ড. ইউনুসকে ঘিরে দিল্লির গভীর ষড়যন্ত্র: কে পড়ছেন ফাঁদে!

ড. ইউনুসকে ঘিরে দিল্লির গভীর ষড়যন্ত্র: কে পড়ছেন ফাঁদে!

বাংলাদেশের রাজনীতি এখন উত্তাল। একদিকে গণঅভ্যুত্থানের ঢেউ, অন্যদিকে পর্দার অন্তরালে চলছে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। রাজনৈতিক অস্থিরতার এই প্রেক্ষাপটে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস। তাঁর চারপাশে গড়ে উঠছে এক গভীর ষড়যন্ত্রের জাল—যার মূল কেন্দ্রে রয়েছে দিল্লি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সাউথ ব্লকে গত বৃহস্পতিবার ছিল উৎসবের দিন। কারণ, বিভিন্ন সংবাদে যখন জানা যায় যে ড. ইউনুস প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন, তখনই উল্লাসে মেতে ওঠে ভারতমাতার সেবাদাস মিডিয়া। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যখন বাংলাদেশের উপর দিল্লির একচ্ছত্র প্রভাব শেষ হয়ে যায়, তখন থেকেই শুরু হয় তাদের পুনরায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠার মরিয়া প্রচেষ্টা।

ড. ইউনুস এই মুহূর্তে ভারতের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় হুমকি। কারণ তিনি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, এবং সবচেয়ে বড় কথা—দিল্লির চেনাজানা বলয়ে পড়েন না। ফলে তাঁকে সরাতে ভারত এবং দেশের ফ্যাসিবাদী শক্তির মধ্যে গোপন সমঝোতা এবং পরিকল্পনা শুরু হয়।

দিল্লির কূটনৈতিক ছক অনুযায়ী, প্রথমে ড. ইউনুসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়—রাজনৈতিকভাবে, মিডিয়া মারফত এবং সেনাবাহিনীর কিছু বক্তব্যের মাধ্যমে। উদ্দেশ্য একটাই—তাঁকে ক্লান্ত করে তুলে পদত্যাগে বাধ্য করা। আর যদি তিনি নিজে থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে ‘প্ল্যান বি’ চালু হবে। সেই পরিকল্পনায় রয়েছে পুরনো বিশ্বস্তদের দিয়ে আবারও একটি নিয়ন্ত্রিত সরকার কায়েমের প্রচেষ্টা।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল এবং প্রশাসনের অংশবিশেষ এই ভারতীয় গেম প্ল্যানে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে। সাম্প্রতিক সেনা ও রাজনৈতিক নেতাদের বিবৃতির সুর বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সেগুলোর সাথে ভারতীয় মিডিয়ার বক্তব্যের অদ্ভুত মিল রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পুরো পরিস্থিতি ভারতীয় হাইব্রিড যুদ্ধ কৌশলের অংশ। ছোট ছোট ঘটনা ঘটিয়ে জনমত বিভ্রান্ত করা এবং শেষে একটি বড় ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে রাজনীতিকে নতুন মোড়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা তাদের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান যে শক্ত অবস্থান নিয়েছে, সেটাকে ভেঙে দিতে বিভাজন ও বিভ্রান্তির খেলায় মেতেছে দিল্লি।

তবে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, ড. ইউনুস আপাতত পদে বহাল আছেন। তিনি উপদেষ্টা পরিষদে স্পষ্ট করে দিয়েছেন—যদি রাজনৈতিক দলগুলো সহায়তা না করে, যদি বিশৃঙ্খলা চলতেই থাকে, তাহলে তিনি আর দায়িত্ব পালন করবেন না। উপদেষ্টা পরিষদে স্বচ্ছ বার্তা দিয়েছেন, সকলকে গুছিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিতে।

তিনি একইসাথে রাজনৈতিক দলগুলোকেও বিকল্প ভাবনার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। এর মধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন শুরু হয়েছে—এই অস্থিরতা কাদের জন্য সুযোগ এনে দিচ্ছে? কে পড়ছে ফাঁদে?

বাংলাদেশ একটি কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়, অন্যদিকে দিল্লির কূটনৈতিক কৌশল। ড. ইউনুসের চারপাশে যে ঘন অন্ধকার তৈরি হচ্ছে, তা শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই বিপন্ন করতে পারে। এখনই সময়, দেশের রাজনৈতিক শক্তি ও জনগণকে বুঝে নিতে হবে—এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে তারা পড়ছে কিনা।