জাতীয়: উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে অনশন শুরু করেছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা আকতার। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর থেকে বগুড়া জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় চত্বরে তিনি অনশন শুরু করেন। ফাহিমা আকতার অভিযোগ করেছেন, পুলিশ দিয়ে তাকে সেখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে তার হ্যান্ড মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে শিবগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজু তার সাথে বৈরী আচরণ শুরু করেন। পরিষদের কোনো কাজে তাকে সম্পৃক্ত করা হয় না। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজেদের ইচ্ছে মতো সকল উন্নয়ন কাজ বণ্টন এবং তদারকি করেন।
নারী উন্নয়ন ফোরামের সমুদয় টাকা চেয়ারম্যান আটকে রেখেছেন। ফলে উপজেলার নারীরা উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করায় গত ডিসেম্বরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগানো হয়। এক মাস ওই কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল।
ফাহিমা আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় সোমবার দুপুরে শতাধিক কর্মী সমর্থক নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে সর্বশেষ সাক্ষাৎ করতে যান। তাকে অফিসে ঢুকতে না দেওয়ায় অফিস চত্বরে অনশন শুরু করেন তিনি। বিকেল ৩টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশসহ গিয়ে তাকে সেখান থেকে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি অনড় থাকায় পুলিশ তার মাইক কেড়ে নিয়ে যায়।
সোমবার সন্ধ্যার পর বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ১৫-২০ জন নারীকে সাথে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন ফাহিমা আকতার। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে তিনি উঠবেন না বলে জানান।
শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ রিজুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি যে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান করছেন। তিনি তার কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে আমার সাথে কথা বলেননি। তবে যতটুকু শুনেছি তিনি ইউএনও’র কাছে একটি আবেদন করেছেন। সেখানে নারী উন্নয়ন ফোরামের ৬০ লাখ টাকা তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার দাবি করেছেন। ইউএনও তাঁকে বিধি মোতাবেক প্রাপ্যতা দেওয়ার কথা বলায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুম আলী বেগ বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না, তাঁকে কোনো স্বাক্ষর ক্ষমতা (সাইনিং অথরিটি) দেওয়া হয়নি, এছাড়া নারী উন্নয়ন ফোরামের টাকা তাঁর কাছে দেওয়া হচ্ছে না এমন দাবি করছেন। তাঁকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে আইনের বাইরে তাঁকে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিধান নেই। তিনি তারপরও সেসব না মেনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মাইকে উচ্চ শব্দে বক্তব্য দিতে থাকেন। তখন তার মাইকটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বারবার বোঝানোর পরও তিনি ডিসি অফিস ত্যাগ করতে সম্মত হননি।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |