রাজনৈতিক: শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নুসরাত তারিন তন্বী এবং তার স্বামী ও মায়ের উপর ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীবাহিনীর ন্যাক্কারজনক হামলায় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বিবৃতি দিয়েছেন। ক্রমাগত অন্যায়-অবিচার এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলাফল এসব ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিবৃতিতে ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের উপর সরকারিবাহিনী ও তাদের সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে নানা পদ্ধতিতে হয়রানি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় অনৈতিকভাবে একটি ওষুধ কোম্পানির নির্দিষ্ট ওষুধ না লেখার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজ কর্মস্থলের কাছে একজন নারী চিকিৎসক ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালের মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের গুন্ডা বাহিনীর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নতুন কিছু নয়, অতি সম্প্রতি সিলেটের জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রলীগের কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল ভাঙচুর, অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগ ও হাসপাতালের কর্মচারীদের উপর হিংস্র হামলা চালায় ছাত্রলীগ।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্রমাগত অন্যায় অবিচার এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলাফল এইসব ঘটনা। দেশের কেউ নিরাপদ নয় আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হিংস্রতা থেকে। ছাত্রলীগসহ সব আওয়ামী পোষ্য ক্যাডারবাহিনী জানে তাদের কোনো বিচার হবে না। তাই তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে দেশে বর্বরতার একের পর এক নতুন নজির স্থাপন করছে।
ডা. রফিক বলেন, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত না থাকায় দেশের সবক্ষেত্রে নৈরাজ্য এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এর পূর্বেও এমন ঘটনায় ছাত্রলীগসহ এদের পৃষ্ঠপোষকদের বেপরোয়া হিংস্রতার বিচার না হওয়ায় এবং সহজেই কোনো ধরনের শাস্তি ছাড়া ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে পারায় তাদের এমন অত্যাচার বেড়েই চলেছে। অবিলম্বে ডা. তন্বী ও তার পরিবারের উপর হামলাকারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই ও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন নারী চিকিৎসক নুসরাত তারিন তন্বীর সঙ্গে কিছুদিন আগে ল্যাবএইড ফার্মাসিউটিক্যালস ঔষধ কোম্পানির মেডিকেল প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধার পছন্দের ঔষধ লেখা নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত ঘটে। বিষয়টি নিয়ে শহিদুল ইসলাম মৃধা তার মামা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবরকে জানায়।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে ডামুড্যা বাজারের আলী আজম জেনারেল হাসপাতাল থেকে এক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া শেষে নিজ বাড়ির কাছে আসলে নারী চিকিৎসক নুসরাত তারিন তন্বীর পথরোধ করে হামলা চালায় জুলহাস মাদবর তার ছেলে ডামুড্যা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি লিখন মাদবর, ল্যাবএইড ফার্মাসিউটিক্যালস ঔষধ কোম্পানির প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধা ও বেশ কয়েকজন লোক। এ সময় নুসরাত তারিন তন্বীর ডাক-চিৎকারে বাসা থেকে তার মা মাসুমা খাতুন ও চিকিৎসক স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।
পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় নুসরাত তারিন তন্বী ও মাসুমা খাতুনকে উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে তন্বীর স্বামী মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ডামুড্যা থানায় ৪ জনকে আসামি ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি মামলা নিয়ে দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও ল্যাবএইড ফার্মাসিউটিক্যালস ঔষধ কোম্পানির মেডিকেল প্রোমোশন অফিসার শহিদুল ইসলাম মৃধাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |