প্রচ্ছদ সারাদেশ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিতে এসে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেল মিলনের

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিতে এসে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেল মিলনের

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার সন্তান রাকিবুল ইসলাম মিলন (৪০) চাকরি করতেন ঢাকায় সচিবালয়ে লিফটম্যান হিসেবে। সচিবালয়ে চাকরির সুবাদে পরিচিতদের মাধ্যমে সম্প্রতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারের জন্য তদবির করে ত্রাণ হিসেবে কয়েক বান্ডিল টিন বরাদ্দ আনেন।

আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে একটি পিকআপে করে নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে আশপাশের গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সেই টিন আনতে যাচ্ছিলেন ফরিদপুরে। ফরিদপুরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে থেকে ত্রাণ এর টিন নিয়ে ফিরে যাবেন ঢাকা। কিন্তু পথিমধ্যে বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে রাকিবুল ইসলাম মিলনের স্ত্রী সুমি বেগম (৩০) ও দুই সন্তান আবু রায়হান (৭) আবু সিনানসহ ১৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

এ দুর্ঘটনায় মর্জিনা বেগম (৭০) নামে মিলনের একজন নানি শাশুড়িরও মৃত্যু হয়। মর্জিনা বেগম একই গ্রামের ওহাব মোল্লার স্ত্রী।

দুর্ঘটনার খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

রাকিবুল ইসলাম মিলনের মামাতো ভাই নুরুজ্জামান খসরু বলেন, ঢাকা থেকে কয়েকটি দরিদ্র পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করে সোমবার বিকেলে বাড়িতে আসে মিলন। সকালে ফরিদপুর রওনা হয়। তার আগে গত রাতে সর্বশেষ কথা হয় তার সাথে। বলেছিল, ত্রাণের টিনগুলো বুঝিয়ে দিয়ে ওই পথেই চলে যাবে ঢাকা। কিন্তু এটিই যে তার শেষ যাওয়া সেটি কি কেউ জানত।

তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে মিলন মেজ ছিলেন। তার বড় ভাই ফরিদুল ইসলাম একজন স্কুলশিক্ষক।