প্রচ্ছদ ধর্ম ও জীবন জিলহজ মাসে যেসব আমল করবেন

জিলহজ মাসে যেসব আমল করবেন

ধর্ম ও জীবন: দেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আরবি বর্ষপঞ্জিকার সর্বশেষ এ মাসটি চন্দ্রবর্ষের চারটি মাসের মধ্যে অন্যতম। রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররমকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এই মাসগুলোয় যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কারণে আরব সংস্কৃতি অনুযায়ী, স্থানীয়রা এই মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি বিশ্রামে সময় অতিবাহিত করত। পবিত্র এই মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। হাদিসে এসেছে, ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল অন্যান্য দিনের আমলের তুলনায় উত্তম। তারা (সাহাবায়ে কেরামগণ) জিজ্ঞাসা করলেন, জিহাদও কি (উত্তম) নয়? রাসুল (সা.) বললেন, জিহাদও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা স্বতন্ত্র, যে নিজের জান ও মালের ঝুঁকি নিয়েও জিহাদ করে এবং কিছু্ই নিয়ে আসে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯১৮)

অপর হাদিসে এসেছে, ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) চারবার উমরা করেছেন। হুদায়বিয়ার উমরার পরবর্তী বছর দ্বিতীয় উমরা ছিল জিলকদ মাসে কাজা উমরা হিসেবে। তৃতীয় উমরা হলো জিইররানা নামক নামক স্থান থেকে, চতুর্থ উমরা হলো তার হজ্জের সঙ্গে। (সুনান আত তিরমিজী, হাদিস: ৮১৫) এ জন্য আলেমগণ সম্মানীয় এই মাসগুলোয় (রজব, জিলকদ, জিলহজ ও মহররম) ফরজ আদায়ের ক্ষেত্রে আরও বেশি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেই সঙ্গে অন্যান্য যে ফরজ বিধানগুলো রয়েছে সেগুলোতেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কারও যদি ফজরের নামাজের ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকে, তবে বিশেষ এই মাসের সম্মানে ফজরের নামাজ আদায়ের প্রতি আরও বেশি যত্নবান হওয়া উচিত। একইভাবে অন্যান্য যে ফরজ কাজ রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেয়া উচিত।

এছাড়াও এই ১০ দিনে বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা উচিত। সুরা তওবায় এই মাসের প্রতি ইঙ্গিত করে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করার কথা এসেছে। পাশাপাশি এই সময়ে সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। সেই সঙ্গে যাদের সামর্থ্য আছে তারা এই দশকে হজ ও কুরবানি করবেন। এছাড়া এ মাসে সুন্নত রোজা রাখতে পারেন। জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা পালন করা যায়। আবার এই সময় রাতে বেশি বেশি ইবাদত করাও উত্তম। ইবন উমর (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) প্রত্যেক মাসে তিন দিন সাওম (রোজা) পালন করতেন। (সুনান আন-নাসায়ী, হাদিস: ২৪১৫) তবে তবে মনে রাখতে হবে, জিলহজ মাসে যে ব্যক্তি কুরবানি করতে চান তার জন্য ১০ দিন চুল-নখ কাটায় নিষেধ রয়েছে। উম্মু সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন (জিলহজ মাসের) প্রথম দশ দিন উপস্থিত হয়, আর তোমাদের কেউ কুরবানি করার ইচ্ছা করে, তবে সে যেন তার চুল ও নখের কিছু স্পর্শ (কর্তন) না করে। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ২৭৮২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৯৫৫)