
ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব বলেছেন, জামায়াতের এখনকার রাজনীতিকে অনেকে লিবারেল হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। এক অংশ বলতে চায়, এটা জামায়াতের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কিনা, কপোটতা বা ভণ্ডামো (হিপ্রোক্রেসি) করছে কিনা। ভোটের জন্য তারা লিবারেল আচরণ করছে কিনা। আরেক অংশ বলবে, তারা ইসলামী শরীয়া রাজনীতি থেকে লিবালের রাজনীতির দিকে যাচ্ছে কিনা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এখন টেলিভিশনের একটি টকশোতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মির্জা গালিব। তিনি বলেন, লিবারেল মতের সঙ্গে আমি একমত না। মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনীতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। এই রাজনীতিটাকে আমি আইডেন্টিফাই করব, বাস্তববাদী (প্রাগমেটিক) রাজনীতি হিসেবে। সমাজ এবং সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া (প্র্যাকটিক্যাল অ্যাডজাস্টমেন্ট)। এখন কোনটা করা উচিৎ, তারা সেটা করব।
জামায়াতকে অবিশ্বাস করার কিছু নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় লম্বা সময় রাজনীতি করছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া দলকে রাজনৈতিক ম্যানিফেস্টোর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পার্টির স্পষ্ট গঠনতন্ত্র থাকতে হয়। জগণের কাছে গিয়ে স্পষ্টভাবে কমিটমেন্ট দিতে হয়। জামায়াত গণতান্ত্রিক রাজনীতি করায় অবিশ্বাসের প্রশ্ন বাস্তব না। তাদের আমরা প্রশ্ন করতে পারছি, তারা কি করতে চায়? তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কিছু নেই।
মির্জা গালিব আরও বলেন, ইসলামিজমের জায়গায় প্রশ্ন করতে চায়, মুসলিমপ্রধান দেখে এখানে কেউ শরীয়ার কথা বললে তো লোকজনের খুশি হওয়ার কথা। এই টেকনিক্যাল প্রশ্নগুলো আসার কারণ হলো, আমরা একটা লম্বা সময় কলোনিয়ালিজমের মধ্য দিয়ে গেছি। ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা কাজ করেনি, ব্রিটিশদের কলোনিয়াল সিস্টেম হয়েছে। আইনও তাই।
তিনি বলেন, এই সিস্টেমের মধ্যে যে জেনারেশন বেড়ে উঠছে, শরীয়ার বিষয়ে তাদের মন-মানসিকতা পজিটিভ না, নেগেটিভ দৃষ্টিতে দেখে। তারা মনে করে, আধুনিকতার সঙ্গে যায় না। সেই জেনারেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আপনি কীভাবে ইসলামী রাজনীতি করবেন, এটা একটি বাস্তববাদী প্রশ্ন। জামায়াত এ প্রশ্ন সমাধানের চেষ্টা করছে। সব জায়গায় হয়তো ভালোভাবে পারছে না। দুইটি সিস্টেমের একত্রীকরণ করতে গেলে সেটা টাফ ও জটিল কাজ। জামায়াত এটা কীভাবে করবে, সেটা দেখতে হবে।
সূত্র: বার্তা বাজার